আজ দিয়া আর অর্কর সেকেন্ড লাভ এনিভার্সারী। ধর্মতলায় একটা সিনেমা দেখে আর কোথাও একটা ভালো কিছু খেয়ে নেওয়া, এটাই হল প্ল্যান। তাই তারা আজ মাঙ্কি বার-এ এসেছে।
আসলে প্রথম দেখা ধর্মতলাতেই হয়েছিল কিনা তাই এটাকে ওরা বাদ দিতে পারে না । কিন্তু এবারে তেমন কোনো সিনেমা চলছে না তাই অর্ক বলেছিল ভালো করে খাওয়া দাওয়ার পরে প্রিন্সেপ ঘাট যাবে। কিন্তু হচ্ছে টা কি অর্ক টা এখন ও এল না কেন! ফোন করে দিয়া এবার অর্ককে বলতে শুরু করে, “অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে কিন্তু, মাথাটা এবার গরম হচ্ছে আসবি না তো তুই!” তখন ই দেখে দূর থেকে অর্ক কানে ফোন নিয়ে দৌড়ে দৌড়ে আসছে। তারপর অনেক সরি টরি বলার পর অর্ক জানায় যে আজ তাকে এমন একটা জিনিস খাওয়াবে যেটা খেলে নাকি দিয়ার সব রাগ জল হয়ে যাবে।
Uber ধরে তারপর দুজন চলল ক্যামাক স্ট্রীট এর মাঙ্কি বার রেস্টুরেন্টে। একটা বিল্ডিং এর ভিতর রেস্টুরেন্ট টা। বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই ভিতরের বেশ এত টা খোলা মেলা বসার জায়গা। অনেক টা এরিয়া নিয়ে। একটা প্রাইভেট লাউঞ্জ আছে,আর আলাদা বসার জায়গাও। বড় বড় জানলা উঁচু সিলিং বেশ একটা রাজকীয় ব্যাপার বলা যায়। সে যাই হোক অর্ক ঢুকে বসেই জলদি জলদি অর্ডার দিল মেন্যু না দেখেই।
হানি গ্লেজড পর্ক রিবস আর চিকেন বাও। সাথে আরও দুটো ডিশ।
পর্ক রিবস টা আসতে দিয়ার সন্দেহ উধাও হয়ে গেল যদিও। উপরের ত্বক টা যেমন বাদামি তেমনি মুচমুচে। কাঁটা চামচ দিয়ে কাটতেই যেন মাখনের গায়ে বসে গেল এত নরম। মধু একদম চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে। এহেন রসালো নরম মাংস মুখে পড়তেই যেন গলে গেল। রিবসের হাড় থেকে মাংস গুলো একদম আলগা হয়ে আসছিল। এত বারবিকিউ মিট খেয়েছে দিয়া এরকম টা কখনও দেখেনি। অর্কর মুখের দিকে তাকিয়ে প্রশংসার ভঙ্গি করল মাংস চেবাতে চেবাতে।
এরপর এল চিকেন বাও।
বাও আসলে চাইনিজ একটা শব্দ যার কাছাকাছি অর্থ হল রুটি। ‘বান’ শব্দটির থেকে ‘বাও’ কথাটি এসেছে। খেতে খেতে খাদ্যারসিক অর্ক এইসব ছোট ছোট ইনফরমেশন দিয়াকে দিতে থাকে। এটা ওর স্বভাব বলা যায়।
নরম গোল আকৃতির ভাঁজ করে মাঝে পুর দেওয়া হয়,চিকেন বাও তে চিকেন কিমা রান্না করে পুর হিসাবে দেওয়া ছিল,বাও টা যেমন তুলতুলে নরম পুর টা তেমন সুস্বাদু। দুটো খাবার ই লা জবাব যাকে বলে।
এর সাথে ছিল বার্ন্ট মাঞ্চুরিয়ান ফ্রায়েড রাইস আর চেটটিনাড চিকেন । সেগুলো ও বেশ ভালো।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে দিয়া কে অর্ক বলল কি ম্যাডাম কেমন লাগল,রাগ কমল! দিয়া মনে মনে ভাবল রাগ তো কোনকালেই গলে জল, পর্ক টা খাওয়ার পরই। কিন্তু মুখে হাসি টিপে বলল,”হ্যাঁ হয়েছে খানিক টা কিন্তু প্রিন্সেপ ঘাটে গিয়ে নৌকা রাইড করালে বাকিটা কমে যাবে।” অর্ক হা হা করে হেসে সম্মতি দিল শেষে।ওদের স্পেশাল দিন টা এত লোভনীয় লাঞ্চে পুরো জমে গেল।