LaughaLaughi

You Create, We Nurture

Uncategorized

টম এন্ড জেরি=ছেলেবেলা

টম এন্ড জেরি বলতেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে আমাদের একটুকরো ছোটবেলা।টম বলতে একটা ঝগড়ুটে বিড়াল আর জেরি বলতে একটা লড়াকু ইঁদুর। নব্বই দশকের ছেলেমেয়েদের যারা ছিল প্রধান আকর্ষণ। এই বিড়াল ইঁদুরের লড়াই দেখতে অপেক্ষা করে থাকতাম সারা সপ্তাহ। আর রবিবারে এলেই পড়ায় আর মন বসে না। কখন বাজবে ন’টা।কখন মা’র কাছ থেকে অনুমতি পাব টিভি খোলার। বিড়াল তো ইঁদুর ধরবেই। আর ইঁদুরও বিড়ালকে ভয় পাবে। এটাই স্বাভাবিক, তাই না? বিড়াল টম সেটা মোটেই করে উঠতে পারে না। না জেরী তাকে ভয় পায়, না টম জেরীকে ধরতে পারে।

উল্টো টমকেই উচিত শিক্ষা দিয়ে ফাঁদে রাখা খাবার খেয়ে ভরপেট দিন পার করে ইঁদুর জেরী।একই বাসায় থাকে তারা। বিড়াল আর ইঁদুরের একে অন্যের পেছনে ছোটাছুটি করার গল্পটাও একরকম। কিন্তু এই ফেব্রুয়ারি মাসে টানা ৮০ বছর ধরে দর্শকদের নিজেদের এই গতানুগতিক, অথচ মজাদার পাকড়াও কররা গল্প দিয়ে আকৃষ্ট করে রেখেছে টম আর জেরী।বন্ধুত্ব নয়, তাঁদের লড়াইটাই বেশি জনপ্রিয়। বহু পুরনোও বটে। বহু বছর ধরেই ইঁদুর জেরি এবং তাঁর চিরশক্রু বেড়াল টমের সেই লড়াই-ই বহু মানুষকে বিনোদন দিয়ে আসছে। আমাদের অনেকেরই ছোটবেলার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ‘টম অ্যান্ড জেরি’র খুনসুটি।

শুরুটা হয়েছিল সেই ১৯৪০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। তবে এমন বিখ্যাত দুটো চরিত্র তৈরি করা কিন্তু মোটেও সহজ হয়নি নির্মাতা বিল হ্যানা ও জো বারবারার পক্ষে। সেসময় মিকি মাউস আর পর্কি পিগের মতো কার্টুন চরিত্র জনপ্রিয়তার শীর্ষে। তাদেরকে টেক্কা দেওয়ার চাপ ছিল বিল আর জোয়ের মাথায়। তবে কোন বুদ্ধিই কাজে দিচ্ছিল না।শেষমেশ হ্যানা নিজের ভালোলাগার গল্প নিয়ে এগোতে চাইল। এমন একটা বিড়াল বানাতে চাইল যেটা কিনা ইঁদুর ধরতে ব্যস্ত। যদিও এর আগে এমন অনেক কার্টুন তৈরি হয়েছিলো। তবে প্রথমেই তারা ‘পুস ইন দ্য বুটস’ নামের চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, ১৯৪০ সালে।

এই শর্ট অ্যানিমেশন ফিল্ম তাদের অস্কার মনোনয়ন এনে দেয়। তবে নির্মাতারা কোনোভাবেই তাও সবার নজরে আসতে পারছিলেন না।নির্মাতারা তখন এই একই ইঁদুর-বিড়াল নিয়ে আবার কাজ করবেন কিনা সেটা নিয়ে দ্বিধায় ভুগছিলেন। সেসময় তাদের কাছে একটা চিঠি আসে। চিঠিতে এমন ইঁদুর আর বিড়ালের কার্টুন আবার বানানোর জন্য অনুরোধ করেন এক দর্শক। ব্যস! যেই ভাবা সেই কাজ।

তবে টম এন্ড জেরি যে শুধু ঝগড়া শেখাতে তা নয়। কার্টুনে অনেক সময়ই টমের সহানুভূতিশীল চেহারা ফুটে উঠেছে। আবার জেরির হাজার জ্বালাতন করার স্বভাবের মাঝে বন্ধু টমের পাশে দাঁড়ানোর স্বভাবটাও দারুন। অর্থাৎ টম এন্ড জেরি খুনসুটি সাথে সাথে শিশুদের মধ্যে বন্ধুত্ব সহানুভূতি, সহমর্মিতা ইত্যাদি নানা রকম মানবিক গুনগুলি গড়ে তুলেছিল সার্থকভাবে। আজকেও যদি টিভি বা মোবাইলের পর্দায় ভেসে ওঠে টম এন্ড জেরির ছবি, মনটা এক দৌড়ে আবার ফিরে যেতে চায় সেই সবুজ শৈশবে।

-মৌমিতা ভাওয়াল দাস

Facebook Comments Box

LEAVE A RESPONSE

Your email address will not be published. Required fields are marked *