সেদিন আকাশ কালো,কালবৈশাখী,
সবে পথের আলো জ্বলে হঠে মশালের মতো।
আমি এক প্রতিবেশী আধারে জোনাকী,
অর্থাভাব নেই তবু আমার শ্রী পরাহুত।

বৃষ্টি এলেই রেলং গুলো ফুপিয়ে কেঁদে ওঠে,
তখন ওদের সাথে বন্ধুপাতাই,ভাব আর আঁড়ির।
হঠাৎ দেখি ছাতা মাথায় দ্রুত পায়ে ছোটে,
কাঁধে ব্যগ পায়ে জড়ায় নীল রং এর শাড়ি।

এটাও পড়তে পারেন –  ঘুণ ধরা প্রেম

আঁধার গভীর হয় মেঘ ক্রমে কাটে,
রেলিং এর সমান্তরাল নীল এলোকেশী।
তবে এনি ঘোষ বাড়ির নতুন ভাড়াটে?
আমরা এখন থেকে হলুম “প্রতিবেশী”।

কপালে হাত,আমার রাত্রি কাটে ইমসোম্যানিক,
অচেনা সকাল এলো,একে বারে অন্য,
কখনো আবেগরা হয় নিয়ন্ত্রনাধিক।
আমি কি অমিত রে? উনি লাবন্য?

আলাপচারিতা রুপ নেয় ক্রমে মহানুভবতায়,
বুক পকেটে শব্দ গুলো ধার করে কিনি,
উনি হলেন ‘মৌনিকা’ আমি ‘অমিত রায়’।
আমার কর্মে অঙ্ক, উনি হলেন বাংলার দিদিমনি।

প্রতিবেশী থেকে বন্ধু হতে বেশি সময় লাগেনি,
আপনি to তুমি টাও অলিম্পিক রেস,
বাকি টুকু হার মেনে শুধু প্রনয় এ পরিনতি,
অঙ্ক আর সাহিত্যে সেদিন মিলেছিলো বেশ।

বর্ষা আর শরৎ শেষে বসন্ত আসে,
পলাশের দেহে লাগে আবীরের লাল,
কাঁধে মাথা স্বপ্ন দেখি চশমার কাচে,
প্রতিবেশী এর নতুন সুর্য, নতুন সকাল।

সেদিন শিতের রাত পথ জনহীন,
গায়েতে জ্বর তার, পারদ চরে পাল্লায়,
হাত ধরে বলে সে আমায় বিরাগবিহীন,
” তুমি যাকে ঈশ্বর বলো, আমি ডাকি আল্লা।”

ভারি হয়ে এলো দেহ, চোখ জ্বলে রাগে,
” এতদিন লুকিয়েছো,এতো আপমান!
কেনো তুমি এতদিন বলোনি আগে?”
শেষে শুধু বলে এলাম তাকে “তুমি বেইমান”।

হৃদয়ে ক্ষতের দাগ,বিঁধে থাকা মন,
দেহ ক্রমাগত হয়ে ওঠে ভারি।
কান্নার থেকে ভারি অপবাদের ওজন,
ঝড়ে যাওয়া পাতাদের খোঁজ নেয়না আদমশুমারী।

মাথায় ব্যাথা সেরে সকাল হয়ে এলো,
সোজা হেটে চলে এলাম দুতলার ঘরে,
দরজাটা খুলে রাখা ঘর সব এলোমেলো,
একটা চিঠি রাখা তবু দেহের ওপরে।

“আমি মৌনিকা নই আমি মুসকান,
আমি বেইমান, তাই তোমায় বলিনি কখনো,
প্রায়ঃচিত্ত করতে সপে দিলাম প্রান।
ভালোবাসা বুঝি তুমি জাত দেখে চেনো?”

তারপর চার বছর কেটে গেছে এখন বসন্ত,
মৌ! তোমায় নিয়ে এখনও হাটি পলাশ সফরে।
যেভাবে কৃষ্ণচূড়া আগুন কিনে আনতো,
জানো?তোমার জন্য ব্রত রাখি, ফুল রাখি কবরে।

ভালোবাসা
প্রতিবেশী
Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *