|| মহানায়িকা ||
রমা দাশগুপ্তকে চেনেন? হ্যাঁ, মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের কথাই বলছি।
বাংলাদেশের পাবনা জেলায় ১৯৩১-এর ৬ই এপ্রিল যে মেয়ে জন্মেছিল, আজ মৃত্যুর বেশ কয়েক বছর পরেও, বাঙালী হৃদয়ে তুফান তোলে, সেই নামটাই― সুচিত্রা সেন!
শুধু একবার ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে, কোটি কোটি বাঙালীর রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন তিনি। নিজস্ব ভঙ্গিতে যখন হেসে উঠতেন, পুরুষ বুকে যেন দামামা বেজে যেতো! কিংবা ‘রিনা ব্রাউন’-এর সেই দৃপ্ত হেঁটে যাওয়া!
আজও বাঙালি ছেলেরা বোধহয়, নিজের প্রেমিকার মধ্যে, একবার হলেও ওনাকে খোঁজে…
মহানায়কের সাথে প্রথম আত্মপ্রকাশ, ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ সিনেমাতে। এরপর, এই জুটিকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
‘সপ্তপদী’-তে অভিনয় করে, ভারতীয় অভিনেত্রী হিসাবে প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মান পান মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে, ১৯৬৩-তে।
বাংলা সিনেমার অলি-গলিতে হিল্লোল তোলা, তাঁর অভিনীত কয়েকটি ছবি হল— ‘সাগরিকা’, ‘সপ্তপদী’, ‘হারানো সুর’, ‘সবার উপরে’, ‘ইন্দ্রানী’, ‘পথে হল দেরি’, ‘শাপমোচন’, ‘বিপাশা’, ‘সূর্য তোরণ’, ‘দীপ জেলে যাই’, ‘উত্তর ফাল্গুনী’ ইত্যাদি। অভিনেত্রীর সবচেয়ে প্রিয় ‘সাত পাকে বাঁধা’।
হিন্দীতেও তিনি ‘আঁধি’, ‘দেবদাস’-এর মতো সিনেমাতে অভিনয় করে, সারা ভারতের প্রশংসা কুড়িয়ে নেন।
নায়িকা এবং অভিনেত্রী এই দুই সত্ত্বাতেই, সমান সফল তিনি, তাই তো ‘মহানায়িকা’!
‘প্রণয় পাশা’ ফ্লপ হওয়ার পর, ১৯৭৮ সালে, পর্দা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন মিসেস সেন, চলে যান লোকচক্ষুর অন্তরালে। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত নিজের ‘নায়িকা’ ইমেজকে, নিজের মতো করে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তিনি।
তাঁর দৈনন্দিন জীবন নিয়ে, মানুষের আগ্রহ ছিল তুঙ্গে।
‘স্টারডম’কে নিজস্ব ভঙ্গিতে শাসন করে, ২০১৪ সালের, একটা জানুয়ারি মাসের সকাল বেলায়, আড়ালে থেকেই, মেঘের আড়ালে চলে যান ‘মহানায়িকা’।
বাঙালী সেদিন generation gap ভুলে, কেঁদেছিল!