ঘড়ির কাঁটা টিক টিক শব্দ করে বলছে -“দুটো তো বাজল আর কখন ঘুমোবি?”মনে মনে হেসে নিলুম খানিক, এই নির্জীব বস্তুটা এতটা যে আমার খেয়াল রাখতে পারে সেটা কখনো ভাববার সময় হয়ে ওঠেনি , সারাটা দিন ব্যস্ত মুহূর্তদের পাল্লাটা এতটাই ভারী কখনো সখনো মনে হয় হারিয়ে যাই দূরে কোথাও সবার অলক্ষ্যে। ভাবতে ভাবতেই কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যায় ,কিছু ঈষৎ ঝাপসা মুখ,কিছু দ্বায়িত্ববোধ জোঁকের মতো কামড়ে ধরে।

অনুভূতি গুলো আজকাল আর তেমন বিরক্ত করে না, ওরাও জেনে গেছে ঘা খেয়ে খেয়ে ভিতরের অন্দর মহলটা পচে গেছে ,ভিতটা নড়বড়ে যেকেনো মুহূর্তেই ভেঙ্গে লুটিয়ে পড়তে পারে তাসের ঘরের মতো। সামনের দেওয়ালে টাঙানো দিন পত্রিকার দিকে চোখ পড়তেই মনে হল পরীক্ষা আসন্ন,আর কিছু দিন পরেই পড়াশোনা জীবনের ইতি ।কত চেনা মুখ অচেনা হবে,কত বকা ঝকারা আবার পর্যায়ক্রমে নতুন মুখদের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেবে। ভাবনায় ছেদ পড়ল ,চলন্ত পাখার গতি শুনে মনে হল তাপমাত্রার পারদটি আজ একটু বোধ হয় উর্ধ্বগামী। মশার গুনগুনানি থাকা সত্ত্বেও জানলটা খুললাম, চারিদিকটা খুব চুপচাপ শান্ত ,স্নিগ্ধ -বেশ ভালো লাগলো , দেখলাম সামনের নারকেল গাছ গুলো এক জন আরেক জনের উপর মাথা রেখে কথকতা করছে । খানিকটা ঈর্ষার জন্ম হলেও চোখের কোলে আত্মসন্তুষ্টির রেখা ছিল। মধ্য গগনে চন্দ্রিমার ছায়ায় গোটা শহর ঘুমিয়ে আছে পরম তৃপ্তির সাথে। এত মায়াবী পরিবেশেও কোথাও একটা ঝড় বয়ে চলছিল , বুকের পাঁজরে সৃষ্ট ক্ষতেরা জিজ্ঞাসার সম্মুখীন , বড্ড বেশী কৌতুহলী ওরা !! অবশেষে পারলাম না আর সামলাতে নিজেকে, ভেঙ্গে পড়লাম। ওরা অগোছালো, ভবঘুরে, বিক্ষিপ্ত তবুও ওরা অভিমানী পাগল।

Facebook Comments Box

By Staff Writer

Editorial Team of LaughaLaughi

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *