“অসম্পূর্ণ” আসলে এক প্রবাহমান সময়ের কাহিনী যখন মানুষ তার ভালোবাসার মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য প্রানপন চেষ্টা করে যায়। তবে গল্পের শেষে সেইসব মানুষেরা তাদের ভালবাসাকে ছুঁতে পারে কিনা তা পাঠকেরা জানতে পারেনা সেই কারণেই হয়তো গল্পের এমন নাম। লেখক স্মরণজিৎ চক্রবর্তী এই সময়ের একজন খ্যাতনামা শিল্পী যিনি তার কলম দিয়ে অনায়াসে সৃষ্টি করেন অসাধারণ সব চরিত্রদের যারা ভীষণ মাটির কাছাকাছি। এই উপন্যাস পড়তে গিয়েও মনে হবে এইসব মানুষদের আমরা চিনি, এরা আমাদের আশেপাশে রয়েছে, সাধারণ হলেও নিজগুনে এরা অসাধারণ। লেখক এই কাহিনীর শেষে আশার কথা লিখেছেন, বিশ্বাসের কথা লিখেছেন। হাতে হাত বেঁধে মনখারাপ, কষ্ট, অপূর্ণতার ব্যাথা রুখে দেবার কথা লিখেছেন, আবার নতুন করে বেঁচে ওঠার এবং অন্যদের বাঁচিয়ে তোলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
এই কাহিনী চারটি মূল চরিত্র নিয়ে লেখা হয়েছে। কাহিনীর প্রেক্ষাপট শহর কলকাতা। এদের কেন্দ্র করে বহু চরিত্রের আনাগোনা হয়েছে। আদিত সাংবাদিকতা ছেড়ে রাজনীতি করতে শুরু করে কেবলমাত্র মানুষের সেবা করার জন্য। সে আদৰ্শ মনে করে এলাকার এম.এল.এ রাজুদাকে। আদিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে সর্বক্ষণ। অন্যদিকে স্মাহি বর্ধমান থেকে কলকাতায় এসে একা থাকে, বেসরকারি কারখানায় চাকরি করে নিজের দিন চালায়। পরিস্থিতি তার জীবনকে জটিল করে তুলেছে, তার একটা বিষন্নতা মাখানো অতীত আছে। কয়েকটা ভুল মানুষের জীবনে কতখানি ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে তা এই অল্প বয়সেই জেনে গেছে সে। এই গল্পের অন্য এক মুখ্য চরিত্র হল নিরমুক্তা ওরফে মুকু। বহুবছর পরে সে একা এসেছে কলকাতায় একজনকে খুঁজতে। মুকু ডিভোর্সি এবং চাকরি জীবনে খুব উন্নতিও করেছে। বর্তমানে আবার একজনের সঙ্গে তার বিয়ের কথাবার্তা চলছে জোরকদমে কিন্তু সে নিজেকে আবার নতুন ভাবে চিনতে শুরু করেছে এই শহরে এসে… আর আছে ঋত্বিজ ওরফে তিজু। তিজু বহুকাল পরে কলকাতায় ফিরেছে নিজের জীবনের অজানা একটা দিক খুঁজে বের করতে। নিজের জীবনের রহস্য উদ্ঘাটন করতে এসে সে নিজেই রহস্যময় ভাবে ঘুরে বেড়ায় কলকাতায়, স্বার্থহীন ভাবে অচেনা মানুষের জন্য কাজ করে দেয়।
এই কাহিনী লিখতে থাকে ঈশ্বর নামক এক পাগল, সে যেন কাহিনীর ভিতরে বসে কাহিনী লিখতে থাকে। চারপাশের মানুষদের জীবনের ওঠাপরা, ঘাত প্রতিঘাত, ভালোবাসা ঘৃণা, সুখ দুঃখ, পরিণতি সবই যেন রাস্তার ধারে বসে লিখে যায় সেই পাগলটা এক উদাসীন ভঙ্গিমায়। তার হাতেই যেন রয়েছে সকলের জীবনের রহস্য লেখার ভার। এই উপন্যাসের চরিত্ররা বাস্তব জীবনে অনেক ঘাত প্রতিঘাতের সম্মুখীন হয়। খারাপের পাশাপাশি অনেক ভালো মানুষের দেখাও তারা পায়। এই গল্প আমাদের পাঠকদের বিশ্বাস করতে শেখায় জীবনটা এতটাও খারাপ নয়, আর কেউ না ভাবুক ঈশ্বর নামের সেই পাগলটা আমাদের সবার জন্য ভাবছে, চেষ্টাও করছে যাতে প্রত্যেকে পৌঁছে যেতে পারে তাদের ভালবাসার মানুষের কাছে। এই গল্পে সম্ভবত ঈশ্বর নামক পাগলটা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের একটা প্রতিরূপ। লেখক সেটাই হয়তো বোঝাতে চেয়েছেন।
মানুষের জীবন রহস্যময়, সময়ের স্রোতে ভেসে যায় সকলেই, কালের নিয়মে পথের বাঁকে দেখা হয় কিছু মানুষের সাথে যারা বদলে দেয় পরবর্তী জীবনের গতি। সেইসব মোড়ে দাঁড়িয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জীবনকে আমূল বদলে দেয়। এই গল্পে আদিত যেমন হঠাৎ করেই তার আদর্শ রাজুদার প্রকৃত চেহারা দেখতে পায় আর তখনি তার জীবনের বাঁকবদলের সামনে এসে দাঁড়ায় সে। নিরমুক্তা এই শহরে এসে ধীরেধীরে বুঝতে পারে তার প্রাক্তনকে সে আজও ভালোবাসে! স্মাহি কি ফিরে পাবে তার ভালোবাসার মানুষকে? তিজু তার জন্মরহস্য সমাধান করে তার বাবাকে কি কাছে পাবে? কাহিনী পড়ে এই উত্তরগুলো গল্পের শেষে জানতে না পারলেও আমরা শেষটুকু পড়ে আশার আলো দেখতে পাই… হ্যাপি এন্ডিং হয়তো সবাই ভালোবাসে কিন্তু ওপেন এন্ডিং এখানে সত্যিই অন্যরকম স্বাদ এনে দেয়।
এটাও পড়ুন : পাড়াগ্রামের মেয়ে কল্পনা (৩য় ও শেষপর্ব)
আমরা পাঠকেরা আশায় বাঁচি যে সব তো ঠিক হয়ে যাচ্ছে এবার! এই উপন্যাস শুরু থেকে টানটান লেখনীর কারণে এবং কাহিনীর প্লট ইন্টারেষ্টিং হওয়াতে পড়তে ভীষণ সুন্দর লাগে। প্রতিটা চরিত্রের ছোটোখাটো দিক এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এমন একটা আধুনিক সময়ের প্রেমের উপন্যাস আমাদের অবসরে সঙ্গী হতেই পারে। সম্পর্কের বুনন এই কাহিনীতে ফুটে উঠেছে এতটাই নিপুনভাবে যে জীবনকে চেনা যায়। নানা দ্বন্দ্ব, দ্বিধা, সংশয় নিয়ে এগিয়েছে গল্প আর পাঠকদের পড়ার আগ্রহ ততই বাড়বে। চরিত্ররা নিজের মনের কাছে প্রশ্ন করতে করতে আরও সামনের দিকে এগিয়েছে, লেখক মানুষের মানসিক টানাপোড়েন অসাধারণ দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন। এই কাহিনীর শেষে লেখক যেন ঈশ্বরের মাধ্যমে পাঠকদের বলছেন শত প্রতিকূলতার মধ্যেও আনন্দে বেঁচে থাকার কথা, হেরে গিয়েও জিতে যাবার বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন। এই কাহিনী আমাদের থেমে যেতে নিষেধ করে, যাই হোক না কেন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে শেখায়।
Following the resounding success of the inaugural edition, SVF Musicproudly announces the arrival of the…
Amidst ongoing speculations regarding the leading lady opposite Shakib Khan in the upcoming film 'Toofan',…
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
In a spectacular celebration coinciding with the birthday of the iconic actor Prosenjit Chatterjee, the…
হিমেশ রেশামিয়ার পর সুরাশা মেলোডিজ থেকে অনুষ্কা পাত্রর নতুন গান পুজো আসছে মানেই বাঙালির নতুন…
The highly awaited trailer of grand Puja release, "Dawshom Awbotaar", produced by Jio Studios and…
This website uses cookies.