বঙ্গজীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে রয়েছে মিষ্টি। আর সেই মিষ্টির নাম যদি হয় রসগোল্লা, তাহলে তো আর কথাই নেই। এটা শুধুই একটা রসে ভরা মিষ্টি নয়, এটা বাঙালিদের আবেগ। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না, এই আবেগের আবিষ্কর্তার নাম। বাগবাজারের নবীনচন্দ্র দাসের নাম হয়তো নিশ্চয়ই শুনেছেন, কিন্তু তিনিই যে এই রসগোল্লার আবিষ্কারক সেটা কি আর জানতেন! এই রসগোল্লার আবিষ্কার, আবিষ্কর্তা নবীন ময়রার লড়াই, তার ইতিহাস— এই অপরিচিত বিষয়গুলি নিয়েই গল্প ফেঁদেছেন পরিচালক পাভেল। আর এই লড়াই দেখাতেই একে একে পর্দায় এসেছে উজান, অবন্তিকা, রজতাভ, খরাজ ও অন্যান্যরা।
নবীনচন্দ্রের মতো এক নামী ব্যক্তি, অথচ তার অজানা ইতিহাস পর্দায় তুলে ধরা সহজসাধ্য নয়। কিন্তু পরিচালকের নাম যখন পাভেল, তখন সেই সিনেমা নিয়ে প্রত্যাশা করাই যায়। এবং হলোও তাই! একদম নিজের ঢঙে সিনেমার গল্প বলেছেন পরিচালক। এ ছবির গল্প পাভেলের। চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন লেখক স্মরণজিৎ চক্রবর্তী ও পরিচালক নিজেই। সিনেমার শেষ পর্যন্ত টানটান ভাবটা বজায় রাখার জন্য অবশ্যই তাদের সাধুবাদ প্রাপ্য।

সিনেমা ঘোষণার পর থেকেই এই সিনেমা নিয়ে সাধারণ মানুষদের মধ্যে তুমুল আগ্রহ ছিলো। তার প্রথম কারণ যদি হয়, এটা রসগোল্লা সৃষ্টির গল্প, তাহলে দ্বিতীয় কারণ অবশ্যই কৌশিক গাঙ্গুলীর ছেলে উজানের প্রথমবার পর্দায় অভিনয়। নামভূমিকায় অসাধারণ অভিনয় করে দর্শকদের আকাঙ্ক্ষা মিটিয়েছেন তিনি। তাকে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন অবন্তিকা। নবীন ময়রার বৌ ক্ষীরোদমণির চরিত্রে তার অভিনয় বাঙালি বহুদিন মনে রাখবে। এছাড়াও অন্যান্য চরিত্রে খরাজ মুখোপাধ্যায়, রজতাভ দত্ত, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, অপরাজিতা আঢ‍্য, চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী, কৌশিক সেন প্রমুখরা।
সিনেমার গল্প নিয়ে কিছু বলা ঠিক নয়। তাহলে সিনেমা হলে সিনেমা দেখার মজা থাকবে না। এই সিনেমার রসগোল্লা দোকানের মিষ্টির থেকে কম মিষ্টি নয়। তাই এই মরশুমে রসগোল্লা চেখেও দেখুন আর সিনেমাহলে গিয়ে চোখেও দেখুন।

 

by Prosun Chanda

Facebook Comments Box

By Staff Writer

Editorial Team of LaughaLaughi

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *