দ্বিতীয় চোখে ‘দ্বিতীয় পুরুষ’ আসলে ঠিক কতটা জমল?

‘বাইশে শ্রাবণ’ এর প্রবীর রায় চৌধুরীর ছায়া ঘুরে বেরিয়েছে গোটা সিনেমা জুড়ে। পাকড়াশী মহাশয় এবারেও যেন দর্শকদের কাছে অধরাই রয়ে গেলেন। দ্বিতীয় মানুষ হিসাবে অনির্বাণের আবির্ভাব হলেও সেও যেন নিজের স্বমহিমাতে বিরাজমান, গল্পের সাথে একাত্ম হতে সময় লাগে।

গল্প এগোয় বেশ ধিমে চালে। কিছু কিছু জায়গায় বোরিং লাগে। ‘বাইশে শ্রাবণ’ এ যে টানটান উত্তেজনায় ভরা পুলিশ-অপরাধীর মনস্তাত্ত্বিক লড়াইটা দেখেছি সেটা এবারে মিসিং। দ্বিতীয় সূত্র হিসাবে সবটাই যেন বেশ নড়বড়ে। চেজিং সিনগুলো ভালো তবে মনস্তাত্ত্বিক এলিমেন্ট এর অভাব আর কেসটা যেন অতিসহজেই সলভ্ হয়ে গেল।

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ঠিকঠাক, তবে ঘুরে ফিরে ‘প্রবীর স্যার’ এর প্রভাব তার মধ্যে বিরাজমান, তবে তিনি বেশ বিশ্বাসজনক ভাবেই গল্পটা এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
গৌরব চট্টোপাধ্যায় নিজ চরিত্রেও বেশ ছাপ রাখে। তবে বলব আগের সিনেমাতে প্রবীর স্যার আর পাকড়াশীর যে সম্পর্ক দর্শক দেখেছেন যার মধ্যে বন্ধুত্ব, স্নেহ থেকে শুরু করে অভিভাবক এবং বসের মিশের আছে দ্বিতীয়তে তা ততটাও গভীর না। রিধিমা ঘোষ চট্টোপাধ্যায় নিজের চরিত্রে ঠিকঠাক তবে একটা সময়ে তাকে বড্ড বেশি মেকি মনে হয়েছে। গৌরবের চরিত্রের মৃত্যুর পর রিধিমার চরিত্রের যে কান্না সেটা যেন কোথাও গিয়ে বড্ড বেশি ‘copied from others’ বলে মন হয় তাতে নিজস্ব অনুভব যেন একটু কম। ‘বাইশে শ্রাবণ’ এ পাকড়াশী আর অমৃতার রসায়নের পাকটা জমজমাটি ছিল তবে তাদের জায়গায় যদি দ্বিতীয়তে গৌরব আর রিধিমাকে বসাতে যান তবে মহা গন্ডগোল, ওদের সম্পর্কটা ঠিক এক্সপ্লোরড্ হয়নি।

অমৃতার চরিত্রে রাইমা সেন ভালো অভিনয় করেছেন, তবে সিনেমার মূল গল্পে তার বিশেষ কিছু অ্যাড্ করার ছিলনা ঠিক যেমনটা সূর্যরূপী আবীরের ছিল না। ভাত ডাল আর বিরিয়ানির লড়াইয়ে প্রথমটাই জেতে আর দ্বিতীয় টা ব্রাত্যই থেকে যায় বরাবর।

অনির্বাণ দ্বিতীয় তে নতুন সংযোজন। তার অভিনয় সাবলীল নিজ আঙ্গিকে তিনি যথাযথ। সিনেমাতে অভিনয় সবারই ঠিকঠাক তবে সিনেমার গল্প চলে ঢিমেচালে আর থ্রিলিং এলিমেন্ট টাও যেন মিসিং তাই কিছুক্ষেত্রে ঝুলে যায়।

সমস্যাটা মূল হল, সিনেমাটাকে ‘বাইশে শ্রাবণ’ এর সিক্যুয়াল না বলে ইনডিপেনডেন্ট বললে বেশি ভালো হত।

Facebook Comments Box

By Staff Writer

Editorial Team of LaughaLaughi

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *