শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘দত্তা’, এ এমন এক কালজয়ী উপন্যাস যা সময়ের বলিরেখাকে উত্তীর্ণ করেছে বহু আগেই। দত্তা বহুচর্চিত এক গল্প। আসলে গল্পের বাঁধন মানুষের সঙ্গে একাত্ম হতে পারলে তবেই সার্থকতা লাভ করে। ভাবলে বিস্মৃত হতে হয় যে অত যুগ আগে শরৎচন্দ্র বাবু এরকম ভাবে সময়ের অকাল ক্ষতকে তার লেখনীর মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন।
‘দত্তা’ বহুবার বহুভাবে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে এবং নজর থেকে আলোচিত হয়েছে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে হয়তো উপন্যাসটিকে পুনরায় আলোচনা করাটা একটু অদ্ভুত লাগতেই পারে। কিন্তু ‘দত্তা’ এমন এক কালজয়ী উপন্যাস যার গল্প বর্তমান যুগেও সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক। তাই মানুষের মনের অনুভূতি গুলোকে সঠিক ভাবে জানতে হলে শরৎচন্দ্র অন্যতম ভরসা।
বিজয়া ধনী বাবার একমাত্র মেয়ে, তার বাবা বনমালী ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হওয়াতে মেয়েকে যথেষ্ট শিক্ষা ও স্বাধীনতা দিয়ে বড় করেছেন। বাবার মৃত্যুর পর শহর থেকে গ্রামে আসে বিজয়া, এখানে তার বাবার বাল্যবন্ধু রাসবিহারী বাবু তার অনুচ্চারিত অভিভাবক এবং তার ছেলে বিলাসবিহারীর সাথে বিজয়ার বিয়ে প্রায় ঠিক। এমন সময় নরেনের সাথে আলাপ হয় তার। এই নরেন কে? তার সাথে আলাপ হয়ে বিজয়ার কী কোনও পরিবর্তন হয় আদেও? বিজয়া কী প্রকৃতপক্ষে পিতৃআজ্ঞা পালন করতে সক্ষম হবে? তার জীবনের অভিভাবক কে? সে নিজে না অন্য কেউ?
বিজয়ার চরিত্র যেন আজকের আধুনিকার অন্যতম দিক। কথায় বলে জীবনসঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিজের মনের কথা শোনা উচিত, তবে কথা শুধু কথাই বাস্তবে তা মূল্যহীন। এই উপলব্ধিটাই আরও সুদূর ভাবে এই উপন্যাসেই বোঝা যায়। সমাজ, আত্মীয় সর্বোপরি নিজের কাছেই নিজের অস্পষ্টতা যেন আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রাখে একজন নারীকে তা সে আধুনিকাই হোক বা গ্রাম্য তরুণী। বিজয়ার প্রতি মাঝে মাঝে করুণার উদ্রেক ঘটে আসলে ছোট বয়সে ভাগ্যের আঘাতে নিয়তির যে বাঁধা পথ তৈরী হয়েছে তার জন্য তা ভেদ করে বেরিয়ে আসা কঠিন এবং দুঃসহ। তার উপর মনের মানুষ টাই যদি মনের কথা না বুঝতে তবে বুঝি সেই মেয়েটির মত অভাগা আর কেউ হয় না।
বিলাসবিহারী বর্তমান যুগের খুব বড় নিদর্শন যারা নিয়মের বেড়াজালে সত্যকে বেঁধে রাখে তাদের মধ্যে অন্যতম বিলাসবিহারী। ধর্ম পালনকর্তা যদি নিজে সঠিক পথে ধাবিত হয় তবে ধর্ম আপনা আপনিই চলবে। কারণ ধর্ম জোর করে চাপিয়ে দেবার জিনিস নয়, এ হল অন্তরের গভীরে থাকা একধরনের বিশ্বাস যা বাইরে থেকে উৎখাত করলেও ভিতরে তা ঠিকই থাকে।
সত্যি বলতে কী নরেনের উপর রাগই হবে, সে আত্মভোলা মানুষ তবে ভালোবাসা কিন্তু আত্মভোলা নয়, সে তার অধিকার ঠিক আদায় করেই ছাড়ে । ভালোবাসা কী কোনোকিছুর আজ্ঞাবহী দাস? যে সে সর্বদা অনুমতি নিয়ে অন্দরমহলে প্রবেশ করবে? সে তো ঝোড়ো হাওয়ার মত উদাসীন তাই বোধ করি মাতালের মত মাতিয়ে রাখে মানুষকে।
শরৎচন্দ্র বাবু আসলে তৎকালীন সমাজের ভালোবাসার ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতাকে উপস্থাপনা করতে গিয়ে বর্তমান যুগেও ‘দত্তা’ কে ভীষণ ভাবে প্রাসঙ্গিক করে দিয়েছেন। সত্যের নগ্ন রূপ যতই কুৎসিত হোক না কেন তা একদিন সামনে আসবেই। সত্য শুধু মুখের কথা নয় এ হল অন্তরের উপলব্ধি যা নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষকে দেখতে সাহায্য করে। এ প্রসঙ্গে শরৎচন্দ্র বাবুর অনুভূতি কত প্রখর তা বোঝা যায় যখন নলিনী নরেনের কথাগুলো দয়ালবাবুকে বলছেন,
” সত্যের স্থান বুকের মধ্যে, মুখের মধ্যে নয়। কেবল মুখ দিয়ে বার হয়েছে বলেই কোনো জিনিস কখনো সত্যি হয়ে ওঠে না। তবুও তাকে যারা সকলের অগ্রে, সকলের উর্ধ্বে স্থাপন করতে চায়, তারা সত্যকে ভালোবাসে বলেই করে না, তারা সত্যভাষণের দম্ভকেই ভালোবাসে বলে করে।”
Following the resounding success of the inaugural edition, SVF Musicproudly announces the arrival of the…
Amidst ongoing speculations regarding the leading lady opposite Shakib Khan in the upcoming film 'Toofan',…
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
In a spectacular celebration coinciding with the birthday of the iconic actor Prosenjit Chatterjee, the…
হিমেশ রেশামিয়ার পর সুরাশা মেলোডিজ থেকে অনুষ্কা পাত্রর নতুন গান পুজো আসছে মানেই বাঙালির নতুন…
The highly awaited trailer of grand Puja release, "Dawshom Awbotaar", produced by Jio Studios and…
This website uses cookies.