শিশুমৃত‍্যু হারে বিশ্বের ১ম স্থান রয়েছে ভারত। সম্প্রতি এই বিষয়ে রিপোর্ট পেশ করেছে ইউনিসেফ। ৫ বছরের কম বয়সের শিশুমৃত‍্যু হারে ১ম স্থানে ভারত।

২০১৮ সালে প্রায় আট লক্ষ এরকম শিশুর মৃত‍্যু হয়েছে।

বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারতের স্থান ১০২, যেখানে পাকিস্তানের মতো দেশও ভারতের থেকে এগিয়ে। সূচক দেখে স্পষ্ট অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে ভারতবর্ষে।

নাইজেরিয়াতে এরকম শিশুমৃত‍্যু সংখ‍্যা ৮,৬৬,০০০ এবং পাকিস্তানে এই সংখ্যা প্রায় ৪ লক্ষ।

এই রিপোর্টে শিশুমৃত‍্যুর প্রধান কারণ হিসেবে অপুষ্টি কে চিহ্নিত করা হয়েছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে ৫ বছরের কম প্রায় ৬৯ শতাংশ শিশুমৃত‍্যু হয়েছে অপুষ্টির কারণে।

ইউনিসেফের এই রিপোর্টে বলা হয়েছে ৫ বছরের কম বয়সী প্রতি দ্বিতীয় শিশু কোনো না কোনো কারণে অপুষ্টিতে ভোগে। যা খুবই দুঃখজনক এবং চিন্তার বিষয়।

রিপোর্ট অনুযায়ী ৬ মাস থেকে ২ বছরের বয়সের শিশুর মধ‍্যে কেবলমাত্র ৪২ শতাংশ শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণে আহার পায়, যার মধ‍্যে আবার কেবলমাত্র ২১ শতাংশের খাদ‍্যাভাস বিচিত্র ধরণের।

ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী ৬-৮ মাস বয়সী শিশুদের মধ‍্যে মাত্র ৫৩ শতাংশ শিশু সময় অনুযায়ী খাবার খেতে পারে।

এই রিপোর্ট থেকে জানা গেছে ৫ বছরের কম বয়সের শিশু বিভিন্ন ধরণের মাইক্রোনিউট্রেন্ট ডেফিসিয়েন্সি তে ভুগছে। ২০১৮ তে শিশুমৃত‍্যু হার বেড়েছে চোখে পড়ার মতো।

ইউনিসেফ থেকে পাওয়া তথ‍্য অনুযায়ী (৫ বছরের কম বয়সের) প্রতি পাঁচজনের মধ‍্যে একজন শিশু ভিটামিন-এ অভাব রয়েছে, অপর পক্ষে প্রতি তিনজনের মধ‍্যে একজন শিশুর ভিটামিন বি-১২ এর অভাব রয়েছে এবং প্রতি পাঁচজনের দুজন শিশু ভোগে রক্তাল্পতায়।

যদিও এই রিপোর্ট অপুষ্টির কারণে শিশুমৃত্যু হার কমানোর জন‍্য সরকারি পদক্ষেপগুলোকে বাহবা দিয়েছে। ইউনিসেফ বলেছে, ‘ন‍্যাশন‍্যাল নিউট্রিশন মিশন’ এই বিষয়ে সারা ভারতবর্ষ জুড়ে কাজ করছে।

অন‍্যদিকে ইউনিসেফ স্বীকৃত ‘অ্যনিমিয়া মুক্ত ভারত’ কার্যক্রমটি সরকার দ্বারা বাস্তবায়িত হয়েছে এবং এটি অপুষ্টি দূরীকরণের কাজ করছে।

ইউনিসেফের তথ‍্য অনুসারে শহরাঞ্চলের শিশুদের অস্বাস্থ্যকর খাদ‍্যাভাস রয়েছে এবং ধীরে ধীরে গ্রাম‍্য এলাকাতেও শিশুদের মধ্যে জাঙ্ক ফুডের খাবার পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এইরকম খাদ‍্যাভাসের কারণেও শিশুমৃত‍্যু হার বাড়ছে।

এই রিপোর্টে পাওয়া সবচেয়ে বেশি আশ্চর্যকর ব‍্যাপার হল শিশুদের মধ‍্যে প্রাপ্তবয়স্কদের রোগ (হাইপারটেনশন, ক্রনিক কিডনি ডিসিস, প্রি ডায়াবেটিসের) ধরা পড়ছে।

শিশুমৃত‍্যু ছাড়াও এই রিপোর্টে বলা হয়েছে প্রতি দুজন ভারতীয় মহিলাদের মধ‍্যে একজন রক্তাল্পতার শিকার। শিশুমৃত‍্যু, ইকোনোমি সবমিলিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে ভারত। এই দুরাবস্থা কাটিয়ে কতটা এগিয়ে যেতে পারে সেটাই দেখার।

Facebook Comments Box

By Staff Writer

Editorial Team of LaughaLaughi

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *