Author: Ditipriya Pal
-
শেষ ট্যাক্সি
গতকালের মতো আজকেও মধুমিতার দেরী হয়ে গেছে অফিস থেকে বেড়তে। ওভার টাইমের জন্য রোজ প্রায় রাত করে বাড়ি ফিরতে হয় তাকে। একটি বেসরকারি অফিসে কর্মরতা সে, মাত্র চব্বিশ বছর বয়সেই সংসারের দায়িত্ব মধুমিতার কাঁধে এসে পড়েছে। সদস্য বলতে বয়স্ক বাবা, মা আর ছোট বোন। বয়সের সাথে মধুমিতার মা’এর সেলাইয়ের কাজ বন্ধ। অসুস্থ বাবার চিকিৎসা, বোনের […]
-
পেন
” উঁফ্,একটা চা-এর খুব প্রয়োজন, কী বলেন প্রোফেসর দত্ত?” ” হ্যাঁ প্রোফেসর বাসু চা হলে মন্দ হয় না, গত তিন ঘণ্টা ধরে উত্তরপত্র দেখতে গিয়ে মাথাটা বেশ ঝিমঝিম করছে।” ” তা যা বলেছেন, আজ তো আমরা দুজন ছাড়া আর কোনো প্রোফেসর উপস্থিত নেই। সকালে অনেকেই এসে ছিলেন, দুপুরের সময়টা আজ দেখছিআমার আর আপনার পড়েছে। ” […]
-
বাগানের গপ্পো
— কিরে ঋজু আজ টিফিনে কী এনেছিস? — রুটি আর আলুর দম এনেছি রে রবি। তুই কী নিয়ে এসেছিস টিফিনে? — আম এনেছি। আমাদের প্রতিবেশী রঞ্জা কাকিমার বাড়িতে দুটো আম গাছ আছে আর পাড়াতে শুধু আমার মা-এর সাথে ভালো খাতির আছে ওনার। কাউকে নিজের আম গাছের আশেপাশে আসতে দেননা উনি, কিন্তু আমার মা একবার চিলি […]
-
অভিশপ্ত হোটেল
“শুভ, দিল্লিতে তোর চাকরি কেমন চলছে? কত বছর পর কলকাতায় ফিরলি।” “দিল্লিতে থাকার সময় বছর সাতেক এই কফি হাউসের কফি আর ফিসফ্রাই-এর কথা খুব মনে পড়েছে। নিজের শহরে ফিরে অদ্ভুত তৃপ্তি। তিলোত্তমাকে ছেড়ে কোথাও মন বসে না। কিন্তু চাকরি তো আর ছাড়তে পারবো না। অর্ক আর সাম্য তোদের ব্যবসার কী খবর? ফেসবুক আপডেটে তোদের হোটেল […]
-
অচেনা সঙ্গী
– কী বিকাশবাবু কাল ফেরার ট্রেনে দেখলাম না যে আপনাকে? – হ্যাঁ, কাল অফিসে একটা সেমিনার ছিলো তাই ৭:৫৫র ট্রেনে ফেরা হয়নি। কাল ১০:৫০ এর শেষ ট্রেনে বাড়ি ফিরেছি। আমার কথা শুনে সবাই সবার দিকে অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে দেখলো। অচিন্ত বললো, “আপনি কী আগের ৯:৩৫ এর ট্রেনটাও ধরতে পারেনি?” স্টেশনে যখন পৌঁছালাম ঘড়িতে তখন প্রায় […]
-
সে কে ছিল?
দিনটি ছিল ১২ই ডিসেম্বর, রবিবার। শীতের দিনে ছুটির অলসতা জাঁকিয়ে বসেছে আমার উপর। দুপুরে আহার শেষ করে ছাদের দিকে যাব, হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো। -হ্যালো, মণি তাড়াতাড়ি চলে আয়, তোর দাদুর শরীরটা আবার খারাপ হয়েছে। আমি একা কিছু বুঝতে পারছি না। -তুমি শান্ত হও, চিন্তা করো না দিদা, আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পৌছানোর চেষ্টা করছি। […]
-
শেষ ইচ্ছা
কলকাতায় কলেজ জীবন শেষ করে আমি দিল্লি চলে যাই, টেলিফোন ডিপার্টমেন্টে কর্মরত। কয়েক মাস পর কর্ম সূত্রে নিখিল চলে যায় উত্তর প্রদেশ। কলেজেই আমাদের বন্ধুত্বের সূত্রপাত। বিগত তিন বছর আমাদের দেখা হয় না। নিজের জীবনে যে যার মতো করে ব্যস্ত; মাঝে মাঝে ফোন বা সোস্যাল মিডিয়া চ্যাটিং। একদিন ফোনে কথায় কথায় নিখিল বলে, “অখিলেশ, দিল্লি […]
-
রক্ষাকর্তা
কর্মস্থল আমার কলকাতাতে হলেও কর্ম সূত্রে বিভিন্ন জেলায় যেতে হয়। সালটি ছিল ২০০৭, ৪ঠা জুন সকাল ৮টা তে ধর্মতলা থেকে বাস ধরে ১১টা নাগাদ তমলুক পৌঁছে যাই। সেখানে কাজ শেষ করে দুপুর ১:১০এর বাস ধরে কাঁথি(কনটাই) এর উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যাই। যখন কাঁথি পৌঁছালাম ঘড়িতে তখন প্রায় ২:৩০টে বাজে। আবহাওয়া হঠাৎ করেই ভোল বদলায়- ঝোড়ো […]
-
শেষ আড্ডা
সারাদিন ঝোড়ো হাওয়া আর অবিরাম বৃষ্টিপাত, আকাশ যে আজ কোনো বাঁধ মানছে না। গতকাল আমার ছোটবেলার বন্ধু কমলেশ- এর গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির খবর শুনে কলকাতা থেকে দুদিন অফিসের ছুটি নিয়ে করিমপুর এলাম। কিন্তু আজকের আবহাওয়া অনুকূল নয়, কোনো যানবাহন নেই, আজ ঘরেই থাকতে হবে মনে হচ্ছে। সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ ঝোড়ো হাওয়ায় লোডশেডিং […]