বিশ্বজুড়ে করোনার প্রভাব পড়েছে অর্থনীতির ওপর। ভারতে করোনার কারণে চলছে দীর্ঘকালীন লকডাউন। লকডাউনের জেরেই চাকরি হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে প্রায় ১৩ কোটি মানুষের। প্রচুর পরিমাণে বাড়বে বেকারত্ব ।দারিদ্র্যের থাবা পড়তে পারে প্রায় ১২ কোটি মানুষের ওপর। ইন্টারন্যশনাল ম্যানেজমেন্ট কনসাল্টিং ফার্ম আর্থার ডি লিটল এর তরফ থেকে এরকম রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। আর তাতেই বাড়ছে আশঙ্কা।
ভারতে করোনার কারণে লকডাউন শুরু হয় ২৩ শে মার্চ থেকে। তিন দফায় চলা লকডাউন বেড়ে চতুর্থ দফায় পা দিয়েছে এবং চলবে ৩১ শে মে অবধি। এর মধ্যেই অনেক ছোটো বড়ো কলকারখানা বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের একটা বড় অংশ কাজ ছেড়ে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে টান পড়েছে। আইটি কোম্পানিগুলোর কর্মীরা বাড়ি থেকে কাজ করছেন কিন্তু এভাবে ঠিক কতদিন চলবে বলা মুশকিল। চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন অনেকেই।
ভারতে যেহেতু করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে তাই চরম আর্থিক দুর্দশায় পড়তে হবে ভালো ভারতকে। চাকরি হারানো, বেকারত্ব বৃদ্ধি, আর্থিক দুর্দশায় মাথাপিছু আয় কমে যাওয়ায় দেশের জিডিপি উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশে কোভিড ১৯ আক্রান্ত লক্ষাধিক এবং মৃত্যু ছাড়িয়েছে ৩০০০।
এই রিপোর্ট অনুযায়ী বেকারত্ব ৭.৬ শতাংশ থেকে বাড়তে পারে ৩৫ শতাংশ। বেকারত্বের কবলে পড়বে প্রায় ১৭ কোটিরও বেশি মানুষ। এই সংখ্যা সত্যিই ভীতিকর। দেশে এবং রাজ্যে চাকরির অবস্থা এমনিতেই খারাপ তার মধ্যে করোনার প্রভাবে বেকারত্বের এই পরিসংখ্যান চিন্তার বিষয় বৈকি।
শুধু তাই নয় , এই রিপোর্টে বলা হয়েছে করোনার কারণে ১৩ কোটি চাকুরিজীবী মানুষ চাকরি খোয়াতে পারেন। দারিদ্র্যের কবলে পড়তে পারেন ১২ কোটি মানুষ এবং চরম দারিদ্র্যের মুখে পড়তে পারে প্রায় ৪ কোটি মানুষ।
এরকম আর্থিক দুর্দশা থেকে মুক্তির জন্য ১০ দফার কর্মসূচি গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে এই রিপোর্টে। প্রধানমন্ত্রীর ‘আত্মনির্ভর ভারত থেকে অভিযান’ প্রকল্পটিকে স্বাগত জানিয়েছেন এই রিপোর্টের কর্মকর্তা গণ।
মহামারি কবলিত আর্থিক দুর্দশা, বেকারত্ব, এইসব ঠেকাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া গ্রামীণ অর্থনীতিকে পোক্ত করা এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ ও ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ পথ প্রশস্ততার কথা বলা হয়েছে। অর্থনীতির ভিত শক্ত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, ব্রিটেন, জাপান ইত্যাদি দেশগুলোর সাথে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভিত শক্ত করার কথাও বলা হয়েছে এই রিপোর্টে।
ভারতবর্ষে বেকারত্ব চিরকাল একটা বড় সমস্যা। এর মাঝে আবার কোভিডের থাবা বসায় অর্থনৈতিক সমস্যা বৃহদাকার হয়েছে। এই মহামারি কাটিয়ে ভারতবর্ষ জগৎ সভায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে ঠিক কিভাবে মোকাবিলা করবে তা সত্যিই চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে আপামর ভারতবাসীর।