রিহাস~
২৭-২৮ এর ইয়ং, হ্যান্ডসাম, কুল বয় রিহাস। সেও তিতাসের মতই এই শহরের বুকে একাই থাকে। গান নিয়ে ঘর-ছাড়া সে। তার বাবার ইচ্ছের বিরুদ্ধে যাওয়ার জন্য নিজের ঘর থেকেই বিতাড়িত সে। বাবার ব্যাবসায় কোনোকালেই মন ছিল না রিহাসের। গান পাগল ছেলে সে। গান নিয়েই মেতে থাকত, ইনফ্যাক্ট এখনো থাকে। আরে সেই জন্যই তো -ছাড়া তার।
যেদিন বাবা তাকে বলেছিল ব্যাবসার কাজ সামলাতে, সেদিনই সে খুব সহজভাবে বাবাকে বুঝিয়েছিল যে- তার ধ্যান-জ্ঞান শুধুমাত্র তার গান। কড়া অথচ স্পষ্ট ভাবে বাবা সেদিন তাকে বুঝিয়ে দিয়েছিল তার ডিসিশন।
খুব ভোরে ঘর ছেড়ে স্টেশনে এসেছিল রিহাস। ভোরের ট্রেনেই পাড়ি দিয়েছিল কলকাতা শহরের বুকে। কিই বা করার তার, সবে একটু একটু নাম করছে সে গানের জগতে। শুধু আসার সময় মায়ের মুখটা বড্ড দেখতে ইচ্ছে করেছিল।
কোনো পিছুটানই সেদিন আর তাকে আটকাতে পারে নি। আসার সময় তানি কেও কিছু বলে আসা হয় নি তার।
শহরে এসে এক বন্ধুর বাড়ি আশ্রয় নিয়েছিল। প্রথম কয়েকমাস প্রচুর স্ট্রাগল করতে হয়েছে তাকে। প্রায়ই রাত হয়ে যেত বাড়ি ফিরতে। তখন সবে নতুন নতুন নাম কুড়োচ্ছে গানের লাইনে। এদিকে বন্ধুটির বাড়িতেও প্রচুর নিয়ম-কানুন। যৌথ পরিবার তো, নিয়মের শাসনে বাঁধা ছিল তাদের জীবন-যাত্রা। পরিবারের মানুষ গুলো অসম্ভব ভালো ও অমায়িক। তবে ওই যে নিয়মের আবর্তনে ঘেরা তাদের জীবন। আর রিহাস প্রায়ই কিছু না কিছু নিয়ম ভাঙাতোই। নিজেরই সংকোচবোধ হতে শুরু করে তার। অবশেষে খবর পেল এক-কামরার এই ছোট্ট ফ্ল্যাটটির। ব্যাস, আর কি। শুরু হলো গায়কের গায়কী জীবন।
কলিং বেলের শব্দে ভাবনা কাটলো। দরজা খুলতেই তিতাস সুন্দরী।
কোনো মেয়ে যে এতোটাও সুন্দর মোহনীয় হতে পারে রিহাসের ধারনা ছিল না। এর আগে পর্যন্ত তানি ছিল তার দেখা রূপসী কন্যে। তবে তিতাসের মতো এতোটা গ্ল্যামারস ছিল না বললেই চলে।
তানি ছিল সহজ-সরল গ্রাম্য মেয়ে। তিতাস কলকাতার সুন্দরী তিলোত্তমা। হট-গর্জেস-টু সেক্সি।
একটি আকাঙ্কিত পুরুষের হৃদয়েই জানে তিতাসের মতো সুন্দরীদের জেল্লার থেকে চোখ ফেরানো কতটা দুষ্কর।
— হাঁ করে কি দেখছিস! ভেতরে আসতে বলবি না নাকি?
— ও হ্যাঁ, আয়, আয়..।
রিহাসের রুমটা বড্ড বেশিই ছোটো। তবুও ভালো লাগে তিতাসের। বড্ড গোছানো-সাজানো। একজন ইয়ং-হ্যান্ডসাম বয় যে এতটা সুন্দর ভাবে পরিপাটি করে ঘর গুছিয়ে রাখতে পারে তা রিহাস কে না দেখলে বিশ্বাসই করতে পারত না তিতাস। অনুরোধও তো একজন ইয়ং ম্যান, তবে ঠিক যেন রিহাসের উলটো।
মন টা আরও একটু ভালো হয়ে যায় তার।
— কিরে, আজ বুঝি নিজের হাতে রান্না করেছিস?
— স্পেশালি তোর জন্য। তুই আসবি শুনেই তো…
মুখ চেপে হাসে তিতাস।
— এই শহরের বুকে তোকেই তো মনের মত বন্ধু হিসাবে পেয়েছি। তোর জন্য সব পারি! হিহি…
–তুই না, একটা ক্ষেপা।
–সত্যি! আমার মাও তাই বলতো…।
— তা রান্নাটা কার থেকে শেখা?
— কেন, মা! ছোটবেলা থেকেই মায়ের রান্নাঘরেই থাকতাম তো, দেখতাম মায়ের রান্না আর মাকে গান শোনাতাম।
— হুঁ..।
— তুই বোস, আমি চট করে স্নান টা সেরে নিই।
— ইসস! এখনো স্নান পর্যন্ত করিস নি? মাই গড!
— জাস্ট ওয়েট টু-মিনিট বেবি।
হাতের আঙুল দেখিয়ে বলে রিহাস।
তিতাস মিস্টি করে হাসে।
রিহাসের সাথে তার বন্ধুত্ব খুব বেশিদিনের নয়। তবুও কেমন জানি মনে হয় সে তার বহুদিনের চেনা। রিহাসের সাথে থাকলে তিতাস ভুলে যায় সময়ের হিসাব। যতই টাইম স্পেন করে ততই যেন কম মনে হয় তার। ইচ্ছে করে আরও একটু থেকে যায়! ইচ্ছে করে কথার উপর কথা সাজায়। তবুও কোথায় যেন আটকে যায়। না-চাইতেও মনে পড়ে যায় কিছু টুকরো স্মৃতির পাতা। নিজেকে মেলে ধরতে গিয়েও, গুটিয়ে নেয় নিজেকে।
অনুরোধের বেলাতেও প্রথম প্রথম এমনই অনুভূতি হত তিতাসের। তাই এই অনাহুত অনুভূতিদের প্রচন্ড ভাবে ইগনোর করে তিতাস।
অথচ, তিতাস তো এমনটা ছিল না। ঝরনার মতোই তো ছিল ঝরঝর। বাবা-মা এর দেওয়া ক্ষত টা মনের মধ্যে জায়গা করে নিলেও কখনোই তাকে ভেঙে ফেলতে পারে নি। দিম্মার পর একমাত্র আদর-আবদার আর ভরসার স্থান তো ছিল ওই অনুরোধের বুকেই। হঠাৎ এমন ভাবে কেন বদলে গেল অনুরোধ? নাকি পুরোটাই ছিল প্রী-প্ল্যানিং? আজ আর এসবের উত্তর খোঁজে না তিতাস। সব কেমন যেন গা-সওয়া হয়ে গেছে তার। মেনে নিয়েছে সত্য টাকে। এটাই তো হওয়ার ছিল, সেই একটু বেশি চেয়ে ফেলেছিল হয়তো।
মোবাইলে টাইম দেখে তিতাস। দুপুর ১ঃ৩০ মিনিট।
আকাশের মুখ এখন আরও বেশি ঘন কালো। এখনি বৃষ্টি নামবে হয়তো ঝরঝর করে।
অনেকদিন বৃষ্টি তে ভেজা হয় নি তিতাসের। অজান্তেই তার দুটি পা এগিয়ে যায় খোলা বারান্দা টার দিকে। আজ আবার বৃষ্টি মাখবে গায়ে। ঠিক যেমন টি মাখতো অনুরোধের সাথে। প্রতিটি ফোঁটার সাথে ছড়িয়ে দেবে নিজেকে। অনেক বদ্ধ থেকেছে আর নয়। উন্মোচন ঘটুক তার শরীর ও মনের অনাহুত অনুভূতি গুলোর। যাদের এতদিন যাবত বন্দী করে রেখেছিল সে অবাধ্য এক শাসনে।
(চলবে)
-অরুণিমা
Following the resounding success of the inaugural edition, SVF Musicproudly announces the arrival of the…
Amidst ongoing speculations regarding the leading lady opposite Shakib Khan in the upcoming film 'Toofan',…
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
In a spectacular celebration coinciding with the birthday of the iconic actor Prosenjit Chatterjee, the…
হিমেশ রেশামিয়ার পর সুরাশা মেলোডিজ থেকে অনুষ্কা পাত্রর নতুন গান পুজো আসছে মানেই বাঙালির নতুন…
The highly awaited trailer of grand Puja release, "Dawshom Awbotaar", produced by Jio Studios and…
This website uses cookies.