এক একজনের সাথে দেখার পর, হঠাৎ প্রেম, সেখান থেকে ভালোবাসা আসে। এসব যখন-তখন, হুটহাট করেই হয়ে যায়। প্রত্যেকটা মানুষের জীবনেই, একজন পাশে থাকার জন্য জীবনসঙ্গীর দরকার হয়‌।তার যাবতীয় সুখ, দুঃখ, কান্না, হাসি, আবদার, অভিযোগ, অভিমান, মনের সব কথা এসব ভাগ করার জন্য একজন দরকার। মনটা হালকা করার জন্যও একজন পার্সোনাল মানুষের,পাশে থাকার দরকার হয়।তাই যে কোনো মানুষ-ই হঠাৎ প্রেম-এ পড়ে।

অজান্তেই ভালো, খারাপ বিচার না করেই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই হঠাৎ অপর মানুষের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। সেই মানুষটার সংস্পর্শে আসতে চায়। তার সকল সুখ এবং দুঃখের ভাগ দিতে চায়। একটা শক্ত হাত, যাতে তাকে আগলে রাখতে পারে এবং একটা শক্ত কাঁধ যাতে তার দায়িত্ব নিতে পারে। এরকম কে-ই বা না চায়?আসলে তারা খুব সরল হয়। যে কাউকে খুব সহজেই বিশ্বাস করে নিতে চায়। কিংবা ছোটো থেকে একের পর এক আঘাতে বেড়ে উঠতে উঠতে তারা আর পেরে ওঠে না।

(ছবি:-সংগৃহীত)

দম বন্ধ হয়ে আসে এক একটা সময়ে।তাই, হঠাৎ একটা বয়সে এসে একটু শান্তি পেতে চায় তারা।মনের কথা গুলো বলে হালকা হওয়ায় জন্য একটা কাঁধ প্রয়োজন হয় তাদের।কিন্তু অনেক সময় তা হয় না। তারা ক্ষনিকের মোহোর বশে, পাশে কোনো মানুষ থাকার লোভ সামলাতে পারেনা। খুব অল্প পরিচয়েই যে কারোর সাথেই সম্পর্ক গড়ে নেয়। এবং অপর মানুষটা কিরকম সেটা বোঝার ক্ষমতা তারা হারিয়ে ফেলে।

কেউ কেউ হয়তো কারোর প্রতি দূর্বল হয়-ই না কখনো। ওরা শুধু নিজেরটা বোঝে এবং নিজেরটা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ওরা শুধু কারোর জীবনে হঠাৎ আসেই, তাদের জীবনে প্রবল ঝড় উঠিয়ে সব তোলপাড় করে দেওয়ার জন্য। অথচ এমন ভাব দেখায় যেন অপরজনের প্রতি ওরা দারুন ভাবে আকৃষ্ট। কিন্তু, আদেও তা হয়না।

ভীষন রকম অগোছালো হয়ে পড়লে বা কোনো খারাপ কিছু ঘটনা ঘটলে ওরা কিছু বুঝতে পারেনা।বা কোনো কারনে আঘাত পেলে ওরা প্রতিনিয়ত লতানো গাছের ঠ্যাঁকের মতো একজন করে ওদের জীবনটা গোছানোর মতো মানুষ খোঁজে।

(ছবি:- সংগৃহীত)

আর অপরজন যখন ওদের সবটা উজার করে দিয়ে গুছিয়ে দেয়। ওদের সমস্ত খারাপটুকু তারা শোষন করে নিয়ে ওদের মুক্ত করে দেয়। সুখ এনে দেয় ওদের জীবনে এবং ওদের মনখারাপ গুলো নিজেরা নিয়ে নেয়। আর ওদেরকে নতুন করে বাঁচতে শেখায়। হঠাৎ, ঠিক তখনই ওরা, তাদের জীবনটা ধ্বংস করে দিয়ে আবার অন্য কাউকে খুঁজতে ব্যস্ত থাকে।

আর তখন তারা, ওদেরকে সমস্ত কিছু গুছিয়ে দিতে দিতে নিজেরাই নিজেদেরকে কঠিন পরিস্থিতিতে এনে ফেলে। সব দিতে দিতে হঠাৎ এতটাই নিঃস্ব হয়ে যায় এবং একা হয়ে যায় তারা নিজেরাই, যে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে আর পারেনা।বা আসতে অনেক সময় লেগে যায় এবং তখন তাদের দগ্ধে দগ্ধে মরতে হয়। ওদের কে সবকিছু দিতে দিতে এবং সব চাহিদা মেটাতে মেটাতে শেষে তাদের শুধু স্মৃতি টুকু আঁকড়ে বাঁচা ছাড়া আর কিছু উপায় থাকেনা।

হাজার চেষ্টা করেও তারা, ওদের ধরে রাখতে পারে না। শুধু মাত্র একটা হাত পাশে পাবার জন্য কত কথা শুনতে হয় এবং কত অত্যাচারিত হতে হয়। তবু তারা সহ্য করে থাকতে চায়। কিন্তু অপরজন তাদের পিশে, মেরে, ফেলে রেখে চলে যায়। আবার অন্য কারোর কাছে। আসলে ওরা কাউকে ভালোবাসতেই জানেনা।

(ছবি:-সংগৃহীত)

যখন শেষে আর উপায় থাকে না। ঠকতে ঠকতে ক্লান্ত হয়ে তারা অবশেষে ওদের ভোলার চেষ্টা করতে থাকে। হঠাৎ পথে চলতে চলতে মুষলধারে বৃষ্টি এলে মাথা থেকে ছাতা সরিয়ে তখন তারা একাই ভিজতে থাকে। আর সবকিছু স্মৃতি ধুয়ে এবং মুছে দিয়ে ভুলতে চায় অতীতগুলো।

নির্জন রাতের বেলায় বালিশে মুখ গুঁজে ফুঁপিয়ে কেঁদে হালকা হতে থাকে তারা। এই ঘটনাগুলোর কথা কাউকে বলতে পারেনা সহজে। শুধু নিজের মধ্যেই চেপে রাখে। কিছুদিন সময় লাগে সব ভুলতে। একটা সময়ের পর, এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে চায়।

এটাও পড়ুন- খুশিটা হয়তো বিলীন হলেও হচ্ছে কোথাও!

আস্তে আস্তে বুঝতে পারে, এরকম করে গড়ে ওঠা হঠাৎ প্রেম সবসময় ঠিক হয় না। ওরা তাদের জন্য পারফেক্ট নয়। তাই, সব কিছু ভুলতে নিজেকে নিজেই সান্ত্বনা দেয় যে, ওরা থেকে যাবার নয়। নিজেরাই নিজেদের একটু শক্ত করে।তারপর ওদের সাথে প্রথমে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। হ্যাঁ হয়তো প্রথম প্রথম কষ্ট হয় একটু। একসাথে কাটানো সময় গুলো মনে পড়ে। কিন্তু সব কাটিয়ে, তারপর হঠাৎ করেই একা থাকার অভ্যাস করে নেয় তারা। শুধু কিছু স্মৃতি থেকে যায় হয়তো।

(ছবি:-সংগৃহীত)

নিজেদের মনকে এটা ভাবিয়ে তারা স্বান্তনা দেয় যে, একদল মানুষের জন্মই হয় শুধু তাদের সবকিছুই বিলিয়ে দেবার জন্য এবং অপরজনেরা শুধু তাদের সবটুকু শুষে নিতে আসে।আসলে তারা সব দিয়েও একাই রয়ে যায়। আর অপরদিকের মানুষটা সব হারিয়েও আবার সব পেয়ে যায়। তাই ওরা কদর করতে জানে না।

আসলে ওরা কারোর সাথে ঘর বাঁধতে পারে না। ওরা শুধু একের পর এক ঘর ভাঙতে জানে। আসলে ওরা কারোর সাথেই সুখী হতে পারে না।

 

Facebook Comments Box

By Staff Writer

Editorial Team of LaughaLaughi

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *