মাস্ক, স্যানিটাইজার আর সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং-গত এক বছরে এদের বন্ধুত্ব খুবই গাঢ় হয়ে উঠেছে। তা এদের এই বন্ধুত্বের কারণ হল ডাকসাইটে সুন্দরী করোনা, যার ভয়ে সারা বিশ্ব থরহরী কম্পমান। করোনা সুন্দরী হলেও, তার মনটি মোটেও সুন্দর নয়। সে মানুষের নাকের ভিতর দিয়ে সুড়ুৎ করে শরীরে ঢুকে একদম গোল বাঁধিয়ে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, একজনের থেকে আরেক জনের শরীরেও ঢুকে পড়ছে।
তা এহেন করোনাকে জব্দ করার দায়িত্ব মানুষ তুলে দিয়েছে এই তিন বন্ধুর হাতে। কিন্তু এই তিন বন্ধু এখনও এই কাজে খুব একটা সাফল্য পায়নি। তো একদিন এই তিন বন্ধু একটি পারফরম্যান্স রিভিউ মিটিং এর আয়োজন করল।
মাস্ক বলল, “ভাইরে, বেশ মানুষের নাক, মুখের উপর বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম, সুন্দরীদের ঠোঁটের ছোঁয়া পাচ্ছিলাম! কিন্তু বেশিরভাগ লোকই তো এখন হয় আমায় পরেই না, নয়তো গলায় ঝুলিয়ে রাখে। খুব কম জনই আমায় আপন করে নিয়েছে রে…”
স্যানি বলল, “আমার অবস্থা তাও একটু ভাল। আগের বছর তো আমার আকাল লেগে গিয়েছিল। লোকে আবার মদ না পেয়ে, আমাকে খেয়েও নিল।”
সোশ্যালদা মুখ বেজার করে বলল, “ভাইরে, তোদের তো তাও কিছু ফলোয়ার আছে, আমাকে তো কেউ ফলোই করে না রে! মানুষের মধ্যে অন্যসময় কত দূরত্ব তৈরী হয়, কত ছোটো ছোটো কারণে। তাতে মানুষের ক্ষতিই হয়। কিন্তু আমাকে মানলে তো মানুষের ভালই হয়, তাও মানে না আমায়।”
করোনা কিন্তু এই তিন বন্ধুর কথোপকথন আড়াল থেকে শুনছিল। এবার সে সামনে এসে বলল, “দ্যাখ, এভাবে চলতে থাকলে কিন্তু আমায় জব্দ করতে পারবি না। যারা তোদের দায়িত্ব দিয়েছে, তারা নিজেরাই আসলে দায়িত্বশীল নয়। আমি কেন এত সফল হলাম? কারণ আমার ডিসিপ্লিন আছে, মানুষের নেই। দুটো লকডাউন তো অলরেডি করেই দিয়েছি, আর একটারও সময় হয়ে গেল। যারা নিজেরা চায়না সুরক্ষিত থাকতে, তোরা তাদের বাঁচাবি কী রে?”
তা করোনা খুব ভুল কিছু কিন্তু বলেনি। মানুষ যদি সংযত হয়, তবেই করোনা হার মানবে। মানুষের সচেতনতাই হল করোনাকে জব্দ করার আসল উপায়, এটা তিন বন্ধু সেদিন বুঝে গেল। শুধু মানুষই এখনও বুঝলনা, এই যা।