সিনেমাতে অ্যাডভেঞ্চার! – “সাগরদ্বীপে যকের ধন”

পরিচালক সায়ন্তন ঘোষালের “সাগরদ্বীপে যকের ধন” সিনেমাতে মূল চরিত্র রূপে আমরা বিমল ও কুমার কে পাই। তাদের দুঃসাহসিকতা, অকুতোভয় মনোভাব এবং রহস্য সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় বুদ্ধিশক্তির বুনিয়াদই পুরো সিনেমাতে ছড়িয়ে আছে। এছাড়া মুখ্য চরিত্র রূপে হীরু দা তো রয়েইছেন।।

পদার্থবিদ্যার গবেষক রুবি চট্টোপাধ্যায় “রেড মার্কারি” খোঁজার অভিযানে ঘটনাচক্রে জড়িয়ে পড়ে বিমল ও কুমার এবং তার সঙ্গে অবধারিত ভাবে হীরু দা। সিনেমাতে কমিক রিলিফের জন্য বঙ্কাদাও আছেন এছাড়া রয়েছে ছোট্ট একটি শিশু, যার অবদান এই অভিযানে অত্যন্ত জরুরি।

গল্পের শুরুর দিকে বেশ গতিশীল, মাঝপথে খানিকটা ধীর হলেও, পরিচালক কোনোরকম ঢিলেমি দেননি। বিমল ও কুমারের চরিত্রটি যথাযথ হলেও, কমিক রিলিফের জন্য বঙ্কা বাবু একটু অতিরিক্ত পরিমাণে বাড়াবাড়ি করেছেন। তিনি মাঝে মাঝে এমন সব প্রশ্ন করছেন যেগুলো হাসির উদ্রেক করলেও কেমন যেন বোকা বোকা লাগে। রুবি চট্টোপাধ্যায় ও হীরু দার চরিত্র বুননও যথেষ্ট শক্তিশালী। তবে সিনেমাতে মোচড় দেবার আশায় পরিচালক শেষের দিকে এমন এক ট্যুইস্ট এনেছেন যা শেষটা ঘেঁটে দিয়েছে।

বিমল রূপে অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ও কুমার রূপে অভিনেতা গৌরব চট্টোপাধ্যায় যথাযথ। হীরুদার চরিত্রায়ন করেছেন অভিনেতা কৌশিক সেন। ভীষণ ন্যাচারালি চরিত্রটা ফুটে উঠেছে। তবে যার অভিনয় মনে দাগ কাটবে সে হল কোয়েল, রুবী চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্রটা তিনি দারুণ ভাবে পালন করেছেন। দেহভঙ্গি থেকে শুরু করে চোখের চাহনি সবেতেই পরিমার্জনের ছাপ। বঙ্কাদার চরিত্রে কাঞ্চন হাস্যরসের উদ্রেক করে। সিনেমাতে আরও একজনের উপস্থিতি দাগ কাটে, তা হল রুমি চরিত্রটি। তার নির্বাক অভিনয় আর সবাক চোখ, গল্পের বুননে সাহায্য করেছে।

সিনেমাতে খুব বেশি গানের ব্যবহার নেই দেখে খুশি হওয়া গেল। সারকামস্ট্যান্শয়াল গান রয়েছে তিন চারটে জায়গায়, যেটা খুবই মানানসই লেগেছে। আরেকটা জিনিস যেটা সত্যিই ভালো লাগল সেটা হল ছবির VFX. অত্যাধিক বাড়াবাড়ি না করে, কম বাজেটে দারুণভাবে VFX ব্যবহার করেছেন পরিচালক। ছবিতে একটা মাত্র চেসিং সিন আছে যেটা বেশ ভালোভাবেই দৃশ্যায়ন ঘটেছে।

গল্পটা জানাশোনা সেই পরিচিত ছকেই বলেই পরিচালক একটু মোচড় দিয়েছেন শেষে। কিন্তু সেটা মোটেই উপাদেয় নয়। ছবির সবটাই ঠিকঠাক তবে শেষের মোচড়টা কেমন যেন অবাস্তব আর খাপছাড়া লাগল। তবে সিনেমাতে যে ভাবে সেটাকে উপস্থাপন করা হয়েছে তা মন্দ না।

সবদিকে থেকে বলতে গেলে শীতের আমেজ গায়ে মেখে সিনেমাটা দেখা যেতেই পারে কারণ মনোরঞ্জনকারী সবরকম উপাদানই সিনেমাতে আছে।

Facebook Comments Box

By Staff Writer

Editorial Team of LaughaLaughi

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *