বাড়ির সবার খাওয়া শেষ। এবার খেতে বসবে ঘোষাল বাড়ির ছোট বৌমা। এবাড়িতে আসা ইস্তক এইটাই চলে আসছে। অসুস্থ শ্বাশুড়ি, ছোট দুই ননদ,ভাসুর আর অকর্মণ্য বড় জা -স্মিতা যে বিয়ের পাঁচ বছরে তিনবার গর্ভবতী। সে অধিকাংশ সময় বিছানায় শুয়ে থাকে।তার জন্য সংসারের দায়িত্ব নিতে গিয়ে বেহাল দশা কমলিকার। তার নিজের কোল শূন্য।
ভোর পাঁচটায় উঠে রান্না। দুপরের রান্না,সকালের জলখাবার সব টা করে দুপরে সবাইকে খেতে দিয়ে বাড়ির বাচ্চাদের দেখাশোনা। বড় বউ বেলায় উঠে বাচ্চাদের খাওয়ান। ওটুকুই কাজ। সারা বছর ওনার নাকি শরীর খারাপ। দুই ননদ বিয়ের আগে কাজ করলেও এখন ছোট বৌদি আসার পর তারা হাত গুটিয়ে নিয়েছে। বড় বৌমার অজুহাত নিজের বিয়ের প্রথম দু বছর কাজ করেছে তাই এখন দায় দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলেছে । সবটা ভার বোধহয় কমলিকার উপর ই।এখন অনন্তকাল তার-ই দায়িত্বে সংসার।
পান থেকে চুন খসলেই ভাসুর বাড়ি মাথায় তোলেন।কোথায় একটা লুচি কম পড়ল।কাকে খাবার দিতে দেরি হলে।অতিথি আসলেও আপ্যায়ন কমলিকার উপর । কিন্তু হাসি -আড্ডা বাকিদের জন্য। কবে কমলিকা একদিন বিকেলে একটু ঘুমিয়ে পড়ে তার জন্য শুনতে হয়েছে সে নাকি ইচ্ছে করেই করেনি।অথচ সেই মানুষ নিজের বউকে কিছু বলতে পারেনা।
কমলিকার স্বামী মানুষটি কাজের ফাঁকেও যতটা সম্ভব সাহায্য করে কিন্তু অশান্তি করতে পারে না তাই চুপ থাকে।
ওদের সম্পর্কের মধ্যে এই নীরব ভালোবাসাটুকুও স্মিতা সহ্য করতে পারে না। নিজের স্বামীর অকর্মণ্যতা মনে পড়ে যায় হয়ত। কমলিকা এত জটিলতা বোঝে না। নিজের মতো কাজ করে যায় মুখ বুজে দিনের শেষে সমালোচনা মাঝে মাঝে কষ্ট বাড়িয়ে দেয়। মনে হয় সব ছেড়ে চলে যেতে কিন্তু স্বামী আর অসুস্থ শ্বাশুড়ির মুখ চেয়ে কিছু করতে পারে না।
এই শুনতে শুনতে একদিন সে সর্বসমক্ষে কেঁদে ফেলল হঠাৎ। আর ভাসুর আর জা দুজনেই বলে ওঠে,”কাঁদার কি আছে? সংসারের এরকম অনেক ঝড় ঝাপটা আসবে।সহ্য করতে হবে। স্মিতা আরও বলল,”পদ্মপাতায় জল নাকি চোখের জল তোমার। ধরে রাখতে পারো না!,আর করেছ টা কি। আমি যা করেছি তার অর্ধেক তো করোনি!” দুই ননদ সানন্দে মাথা দুলিয়ে সায় দিল।
সেইদিন দুবছর বাদে প্রথম বাঁধ ভাঙল ধৈর্য্যের।কমলিকা বলে উঠল,”আমার বিয়ের এক মাসের মাথা থেকে মা অসুস্থ, তুমি প্রেগন্যান্ট সব দায় আমিই নিয়েছি। স্কুলের চাকরি ছেড়েছি যত কম টাকার -ই হোক চাকরি ছিল তো একটা নিজের । পদ্ম পাতায় জল হলাম আমি, আমার সম্মান, প্রত্যেক মূহুর্তে যা টলমল করে। তোমরা,এই সংসার এই সব ই তাই ওই জলের মতো। আমি ধরে রেখেছি দু হাতে নাহলে কবেই গড়িয়ে যেত।” তিন নম্বর বাচ্চা হওয়ার পর এক বছর কেটে গেলেও সংসারের দায়িত্ব এতটুকু ভাগ করোনি। কারণ টা হয়ত তোমার অনর্থক হিংসে আমায় নিয়ে,আমার যোগ্যতা, আমার স্বামীর ভালোবাসা, সমর্থন। আমায় বিপদে ফেলে মজা পাও। তবে সব ভালোর-ই শেষ আছে। সেটা মাথায় রেখো। সময় সবার একরকম যায় না।”
এতদিন বাদে কমলিকার শান্ত স্বামী ধীর গলায় স্মিতা কে বলল,”যদি চাও সংসার টা ঠিক ভাবে চলুক,এবার থেকে বোনেরা আর তুমিও কাজের দায়িত্ব নেবে নাহলে এই বাড়িতে আমি আর কমলিকা থাকব না।” শ্বাশুড়ি মা বিছানা থেকে বললেন ,”আমায়ও সঙ্গে নিস বাবান। আমিও থাকব না”।
কথাগুলো সাপের মাথায় মন্ত্র পড়ার মতো কাজ দিল।সেদিনের পর থেকে চক্ষুলজ্জায় হোক কিংবা ভয়ে দুুুই ননদ আর স্মিতা কমলিকার কাজ ভাগ করে নিতে লাগল একটু একটু করে।
The vibrant city of Kolkata is set to host an extraordinary musical event as renowned Indian music…
In a heartwarming ode to friendship and the unifying spirit of Pujo, SVF Brands has…
The year 2024 has not been what I had planned so far. Everything went downhill.…
Following the resounding success of the inaugural edition, SVF Musicproudly announces the arrival of the…
Amidst ongoing speculations regarding the leading lady opposite Shakib Khan in the upcoming film 'Toofan',…
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
This website uses cookies.