জানো? কোথাও যেন বৈচিত্র্য নেই, নতুনত্ব নেই; রোমাঞ্চ নেই। থাকার মধ্যে শিহরণ আছে, রোজ রোজ নিয়ম করে টিভি চালিয়ে মৃত আর অসুস্থ মানুষের সংখ্যার মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলার অবসাদের শিহরণ! সংবাদমাধ্যমের হাড় হিম করা বেকারত্বের percentage এর দেখনদারির শিহরণ! রোজ চোখ খুললেই আর কাউকে না দেখতে পাওয়ার শিহরণ!
জানো? প্রথম প্রথম অনাহূত বন্দীত্বের একটা ভালোলাগা ছিল (অনেকটা সেই প্রেমিকের সাথে রাতজাগার ভালোলাগার মত; কষ্টকর, তবু সয়ে নেয়ার মত), এখন না, সেটাও কেমন সহ্য করতে পারছি না। (কতকগুলো চাকরির দরখাস্তের উত্তরের আশায় বসে থাকা, সবার কাছে কৃপার পাত্র ছেলেটার যেমন মনকেমন হয়; ঠিক সেরকম; দীর্ঘশ্বাসে ভরা)
জানি, তুমি বলবে আমি অবসাদগ্রস্ত; বড় বেশী ভাবুক, নইলে কেউ এসব ক্ষণিকের জটিলতা নিয়ে চিন্তিত হলেও depressed হয় না। কিন্তু বিশ্বাস করো আমি বেরোতে পারিনি এর থেকে! চেয়েছি, পারিনি একা একা!
মাঝে ভেবেছিলাম; জানো? বলব তোমাকে, সুশান্তের মৃত্যুর খবরে social media তোলপাড় হয়ে যাওয়ার পর। ভেবেছিলাম বলব। বলব যে, আমি আজকাল ভালো নেই; রাতে শুতে গিয়ে স্বপ্নে শুধু লাশ দেখি, শুধু …..লাশ ……
এক, দুই, তিন গুনতে থাকি, ঘুম আসে না, insomnia বোধ হয়!
বলতে চেয়েছিলাম, যে ফুলগাছ টায় আমি রোজ জল দিতাম, ওটা আমি কিসের ঘোরে যেন উপড়ে দিয়েছি, জানো?
বলতে চেয়েছিলাম একার জন্য রান্না করতে আমার আর ভালো লাগে না, (আগের দিন ইচ্ছে করে গরম কড়াই এর গায়ে হাত ঠেকিয়েছিলাম, দেখছিলাম কতটা পোড়ে, কিন্তু কি অদ্ভুত!
আমার ব্যথার চেয়ে বেশী শান্তি হচ্ছিল।
মনে হচ্ছিল; এক্ষুনি গিয়ে হাতটা কাটি; সারারাত হন্যে হয়ে এসব ভাবনা থেকে নিজেকে বার করে আনার চেষ্টা করে গেছি।
পারিনি, জানো?
বলতে চেয়েছিলাম তোমায়, তুমিও আজকাল আমায় অসুস্থ ভাব, কথা বল না; তাই মুখে বলতে পারিনি, পাগল ভাবলে!
আমিও জানতে চেয়েছিলাম এরকম অনুভূতি কেন আসছে, যা কস্মিনকালেও হয় নি! কিন্তু তুমি তো!
যাই হোক; রাত প্রায় দুটো; মেসেজটা লিখছি; জানি ফোন টা সাইলেন্ট; শুনতে পারবে না; অসুবিধা হবে না; তাই লিখছি।
জানো? মিতাকে বলে অনেক ঘুমের ওষুধ আনিয়েছি, ভাবছি সবকটাই খাবো; ঘুম হচ্ছে না বলেই বোধহয় এসব!
যাকগে, চিন্তা কোরো না; তুমি ভালো থেকো; good night!
পুনশ্চ: ঐ মেসেজ এর পর ফোনটা আর খোলেনি কখনো!
সাইড টেবিলে চিরকুুুুটে লেখা ছিলো শ্রীজাতের একটা লাইন;
” অবসাদ, কোনো কুশলকাব্য নয়! “