LaughaLaughi

You Create, We Nurture

Interviews

মন মিলিয়ে মনামী

•দুর্গাপুজো এবং দীপাবলি, সব মিলিয়ে কেমন কাটলো এবার?

—যেরকম থাকে প্রত্যেকবার। opening ছিলো, judgement ছিলো। খুব খাটনি হয়েছে! এগুলো না থাকলে তো ভীড়ের মধ্যে ঠাকুর দেখা হয়না তাই এগুলোর মাধ্যমে ঠাকুর দেখাও হয়ে যায়।  show ছিলো কোলকাতার বাইরে। সব মিলিয়ে packed-up দুর্গাপুজো ছিলো। আর দিওয়ালীতে তো আমার বাড়িতেই পুজো থাকে, ‘অলক্ষী বিদায়’ যাকে বলে। দিপাবলীর লক্ষীপুজো আর কী! প্রত্যেকবার খুব বড়ো করে অনুষ্ঠান হয় কিন্তু এবার আমার এক ঠাকুমা অসুস্থ থাকায় বড়ো করে অনুষ্ঠান হয়নি তবে পুজোটা হয়েছে বাড়িতে।

সকালে পুজো হয়েছে, বাড়িতেই ছিলাম আর সন্ধেবেলায় বাজি পোড়ানো হয়েছে একটু। বাজি ফাটানো বলবো না, কারণ বাজি ফাটানো হয়নি। সেটা উচিৎও নয় আর পছন্দও করিনা।
আবার সন্ধেবেলায় আরতি হয়েছে।  নিজেদের লোকজনদের নিয়েই ছোট্ট করে পুজোটা হয়েছে।

•আপনি ১৭ বছর বয়সে ইণ্ডাস্ট্রী জয়েন করেছেন ‘সাত কাহন’-এ।  আমরা জানতে চাইবো যে এত অল্প বয়সে ইণ্ডাস্ট্রীতে আসা কীভাবে?

—আমি বসিরহাটের মেয়ে। বসিরহাটের আরেকজন ভদ্রলোকের কথা বলতে চাইবো এখানে, তিনি হলেন দেবীদাস ভট্টাচার্য্য। উনি অনেকদিন ধরে নির্দেশনার কাজ করছেন। আমার বাবার সাথে ওনার ভালো পরিচয় ছিলো।
দেবীকাকু দেখেছেন যে আমি বাবার নাটকের দলে অভিনয় করছি, সাথে গান এবং নাচও।

Monami Ghosh

‘সাত কাহন’ রাজাদা পরিচালনা করছিলেন এবং দেবীকাকু সহকারী-পরিচালকের কাজ সামলাচ্ছিলেন। এই প্রজেক্টের প্রধান চরিত্র ‘দীপাবলি’র জন্য, নতুন একটি বাচ্চা মেয়ে খোঁজা হচ্ছিলো। দেবীদা আমার কথা আমার বাবাকে বলেছিলেন। তারপরে বাবা-মার সাথে গেছিলাম অডিশানের জন্য। তখন মনে হয়েছিলো যে পড়াশোনা আর অভিনয়টা একসাথে করবো। এরপর ১৫দিন পরে জানতে পারলাম যে আমি সিলেক্টেড। এভাবেই আমার শুরু। বলতে পারো যে ‘সাত কাহন’ আমার জীবনের প্রথম শুটিং কিন্তু প্রথম টেলিকাস্ট হয়েছে একটা মেগা-সিরিয়াল, ‘শেওলা’।

•যখন আপনাকে কোনো প্রজেক্টের জন্য অ্যাপ্রোচ করা হয় তখন আপনি কীসের নিরিখে সেটা সিলেক্ট করেন? ক্যারেক্টার না স্টোরি-লাইন?

—দেখো, মেগা-সিরিয়ালে স্টোরি আট্র্যাক্ট করে না কারণ যতদিন চলবে তার উপরে নির্ভর করে স্টোরি-লাইনটা। আর আমি মেগা-সিরিয়ালে লিড্ ছাড়া করতে চাইনা আর করিওনা তো লিড্-ক্যারেক্টারটা ভালোই হয়। লিড্-ক্যারেক্টার এবং গল্পটা জোরালো হলে আমি মেগা-সিরিয়ালটা সিলেক্ট করে থাকি। আর ছবির ক্ষেত্রে আমার চরিত্র এবং গোটা গল্পটা সংক্ষেপে শোনার পর আমি আমার সিদ্ধান্ত জানাই।

•আপনি মেগা-সিরিয়াল এবং ছবি, দুটোতেই কাজ করেছেন। দুটোর মধ্যে তফাৎটা কোথায়?

—মেগা-সিরিয়ালের ধরণ এখন একদম পাল্টে গেছে। ১৯৯৭ থেকে শুরু করেছি আর এখন ২০১৭। কাজের ধরণ একদমই পাল্টে গেছে। কিন্তু এখন অনেক ফাস্ট্ হয়ে গেছে সবকিছু! যেমন আজ অডিশান্ হলে কাল সিলেকশান্ জানানো হয় আর পরশু থেকেই কাজ শুরু। এখন আমার মনে হয় যে অভিনয়টা শেখা থাকলে ভালো হয় কারণ আগেকার মতন এখন আর হাতে ধরে শেখানো হয়না।

•আপনি অনেক চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এমন কোনো বিশেষ চরিত্র আছে যেটা আপনি করতে চান? মানে যেটাকে আমরা ‘dream role’ বলি?

—অনেক আছে অনেক! কত ভালো ভালো গল্প তো আমাদের বাংলাতে হয়-ই না! যেরকম ধরো, শ্রীদেবীর ছবিটা ‘sadma’, ওই চরিত্রটা। ‘black’-এ রানী মুখার্জ্জীর চরিত্রটা…

আমার ট্যাগ-লাইনটা হচ্ছে-“ভালো ছবি আর ভালো চরিত্র”। হাজার হাজার চরিত্র আছে যেগুলো করা হয়নি এখনো!

•আপনি একজন সফল অভিনেত্রী। আজ থেকে ৫ বছর পর আপনি নিজেকে কোথায় দেখতে চান?

—অবশ্যই নিজেকে একজন সফল অভিনেত্রী হিসেবেই দেখতে চাই। আজ যে জায়গায় আছি, তার চেয়ে আরো উঁচু জায়গায় নিজেকে দেখতে চাই। যেখানে আছি, তার থেকে কম যেন না হয়, এই যা।

•কোনো শুটিং-এর সময়কার মনে রাখার মতন কোনো ঘটনা আপনি আমাদের সাথে শেয়ার  করতে চান?

—এরকম অনেক মুহূর্ত আছে! ‘সাত কাহন’টাই বলবো কারণ ওটা আমার প্রথম কাজ। সাত কাহন’-এ একটা দৃশ্য ছিলো জলপাইগুড়িতে। পাহাড়ী রাস্তায় আমাকে আর আমার তিন বন্ধুকে পাগলা হাতি তাড়া করবে। হাতিটা আমাদের সত্যিই তাড়া করেছিলো! আমরা ভয় পেয়ে এমন দৌড়েছিলাম যে পড়ে গিয়ে আমাদের হাঁটু কেটে গেছিলো!
এরকম অনেক ঘটনা রয়েছে। আমাকে অনেকেই বলেছিলো যে আমি সুচিত্রা সেনের মতন দেখতে কারণ আমি ওনার মতন ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতাম। এটা শুনে বেশ মজাই লাগতো!

•আপনি তো অভিনয় ছাড়াও গান, নাচ সবই করেন। এত ব্যস্ততার মধ্যেও, এমন toned-body কি করে ধরে রাখেন?

—ওই তো, কাজ করলেই হয়ে যায়(হাসি), বিশেষত নাচটা। ওয়েস্টার্ন-ডান্স আর কী! আমি একটা সময় যোগাসনও শিখতাম এবং তার জন্য জেলাস্তরে স্বর্ণপদকও পেয়েছিলাম। এগুলোর ফলই এখনো পাচ্ছি, আর কী।

•উঠতি এবং নব্য অভিনেতাদের জন্য কোনো পরামর্শ দিতে চান আপনি?

—এখন যে ছেলে-মেয়েরা কাজ করতে এসেছে তারা খুবই প্রতিভাবান! খুব তাড়াতাড়ি ওরা সবকিছু শিখে নিতে পারে। নতুন প্রজন্ম যথেষ্ট চট-জলদি, গান-নাচ-অভিনয়, সবকিছুতেই।

•আপনার পরবর্তী  প্রকল্পগুলি কিরকম?

—দুটো ছবির কথা হয়েছে। কাজও শুরু হবে কিছু দিনের মধ্যে। মুম্বাইতে একটা TVC-র কথা চলছে। দেখা যাক!

•আপনাকে অজস্র শুভকামনাপূর্ণ অভিনন্দন! আপনি আপনার fan ও follower-দের কিছু বলতে চান?

—হা হা! অসংখ্য ধন্যবাদ!
আমি চেষ্টা করব fan ও follower-দের জন্য আরো ভালো কাজ করার! Keep loving me!
তোমাদের জন্যই আমরা তৈরী।

•অতঃপর, আমরা আপনার থেকে LaughaLaughi-র জন্য কিছু শুনতে চাই…

—তোমাদের বেশ কিছু সাক্ষাৎকার আমি দেখেছি ও পড়েছি, ভালো লেগেছে খুব!
তোমার সাথে কথা বলেও খুব ভালো লাগলো! 

Facebook Comments Box

LEAVE A RESPONSE

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Editorial Team of LaughaLaughi