LaughaLaughi

You Create, We Nurture

Special Story

ভারত আমার ভারতবর্ষ

” ভারত আমার ভারতবর্ষ
স্বদেশ আমার স্বপ্ন গো।।
তোমাতে আমরা লভিয়া জনম
ধন্য হয়েছি ধন্য গো।। ”

(ছবি-গুগল)

সুজলাং, সুফলাং, শস্যশ্যামলাং আমাদের এই দেশ
ভারতবর্ষ-এ জন্মে সত্যি আমরা ধন্য।
আমরা গর্বিত।
১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট ভারত ব্রিটিশ রাজশক্তির শাসন কর্তৃত্ব থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল আজকের দিনেই।
পরাধিনতার শৃঙ্খল ভেঙে মুক্তির দিশা দেখেছিল আজকের দিনেই।
এই ভারত-এর বুকে নেতাজী,বিনয়-বাদল-দীনেশ এনাদের চিহ্ন রয়েছে প্রতিটা কোনায় কোনায়।
এনাদের জন্য ই এত সুন্দর ভারতবর্ষ কে উপলব্ধি করেছি আমরা।

ছোটোবেলায় ঠাকুমা আজকের দিনে বলতো,
এইটুকু একটা ছেলে মৃত্যু বরন করেছে , দেশের জন্য.. তাও আবার হাসি মুখে।
আমি বলতাম, ভাবা যায়, মৃত্যু ও কেউ হাসি মুখে করতে পারে ঠাম্মি!
হ্যাঁ পারে, তাই তো আজকে আমরা স্বাধীন ভারতবর্ষ-এ বাঁচতে পারি।

বাবা সক্কাল সক্কাল উঠে দেখতাম বই-এর দিকে তাকিয়ে বলতো..নেতাজী,তোমাকে আমরা কখনো ভুলিনি আর ভুলবো ও না।
তোমার সেই স্লোগান,”তোমরা আমাকে রক্ত দাও,আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো।”
আজও বুকের ভেতরটা নারিয়ে দেয়।
তোমাদের জন্যই এই দিন।
বাবাকে বলতাম, বাবা.. নেতাজী কে? ওনার সাথে দেখা করবো।
বাবা হেসে বলতেন, ধুর পাগল.. উনি তো দেশের জন্য লড়াই করে প্রান দিয়েছেন।

(ছবি-গুগল)

দাদা, দিদি সকলে পতাকার সামনে গিয়ে চিৎকার করে বলতো,”বন্দেমাতরম, বন্দেমাতরম।”
মা ভোরবেলা গান গাইতেন,
“মুক্তির মন্দির সোপান তলে, কত প্রাণ হলো বলিদান,
লেখা আছে অশ্রুজলে….”
কৌতুহল ভরে মা কে জ্ঞিগেস করতাম, মা..কি লেখা আছে অশ্রুজলে!
মা বলতো, হাজার হাজার শহীদ সৈনিক….যারা দেশকে ভালোবেসে, দেশের জন্য প্রান দিয়েছেন, তাদের অশ্রু, তাদের পরিবারের অশ্রু।
যাদের জন্য আমরা নিশ্চিন্তে থাকতে পারি,
তাদের ভারতবর্ষ-এর জন্য জীবন ত্যাগের কথা অশ্রুজলে লেখা আছে।

ছোট্টো আমি তখন কিছুই বুঝতে পারিনি।
স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বাড়ি এসে দেখি দাদু পাড়ার মঞ্চে গাইছে-
“আমার এই দেশেতে জন্ম যেন এই দেশেতে মরি।”
দাদু বলছে,
কে বলেছে, নেতাজী নেই,
তাকিয়ে দেখো, ভারত-এর বুকে হাজার হাজার শহীদ..
যারা দেশের জন্য প্রান দিয়েছেন, তাঁরাই নেতাজী, তাঁরাই প্রফুল্ল এবং তাঁরাই প্রীতিলতা।

(ছবি-গুগল)

যারা সারাদিন খেটে মাঠে চাষ করে আমাদের মুখে তুলে দেয় খাবার, তারাই তো মাস্টার দা।
যেসব মেয়েরা ঘরে ঘরে সোনা আনে,দেশের সম্মান রাখে, লড়াই করতে পারে। সেই হিমা ই তো অরুনা আসফ আলি। সেই কল্পনা চাপলা ই তো আজকের মাতঙ্গিনী।
কে বলেছে, ওনারা নেই ! ওনারা সারাজীবন এভাবেই আমাদের সঙ্গেই আছেন আর থাকবেন।
ওনারা এই ভারত-এর মাটির বুকেই আছেন। এই মাটিতেই জন্মেছেন, আবার এই মাটিতেই মরেছেন।

আজ বুঝতে পারছি, সত্যি, সত্যি ওনারা আছেন।
যে ছেলেটা সারাদিন পথে পথে ঘুরে বেড়ায়, গরীব বলে চাকরির পায়নি, তবুও সংগ্ৰাম থামায়নি,
তাকে আমি ক্ষুদিরাম মনে করি।
যে মেয়েটার গায়ে কলঙ্ক লেপে দিয়েছিল, সে ও যুদ্ধ করতে ভুলেনি এবং উঠে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করছে,
তাকে আমি মাতঙ্গিনী মনে করি।

তাই তো চিৎকার করে পতাকার দিকে তাকিয়ে বলি,
নেতাজী তুমি ফিরে এসো এভাবেই, শতরূপে শতবার এই বাংলার বুকে।
হে ক্ষুদিরাম, হে ভগৎ সিং, হে প্রীতিলতা তোমরা ফিরে এসো।
এটাও পড়তে পারেন: ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি

তোমরা আমাদের গর্ব।
আমরা ভারতবাসী। ভারতবর্ষ আমাদের দেশ।
আমরা গর্বিত আমরা ভারতবাসী।
তোমরা এভাবেই সারাজীবন থেকো আমাদের সঙ্গে।
বন্দেমাতরম। বন্দেমাতরম।

Facebook Comments Box

LEAVE A RESPONSE

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Editorial Team of LaughaLaughi