পৃথিবীর কেউ ভালো তো বাসেনা/ এ পৃথিবী ভালো বাসিতে জানেনা।
এমনটাই ভাবছো তো উন্নত সমাজ?
ভাবছো এত কিছু এক ধাক্কায় সহ্য করা যায়!
কিন্তু আমি তো করেছি, সেই সৃষ্টি থেকে প্রতিনিয়ত।
তোমাদের সাবধান করেছিলাম অনেক ভাবে,
স্মার্টফোনের নোটিফিকেশনে সেসব চাপা পড়ে গেছে।
তান্ডব কেনে ঘূর্ণিঝড়ে, ভিটে মাটি খায় জলের তোড়;
সস্তা বিকোয় স্বপ্ন ঘুড়ি, প্রকৃতি ও প্রযুক্তির ভীষণ আড়ি।
ভাইরাস নিয়ে ঘর করছিস, হারিয়ে ফেলেছিস মনের জোর।
আমারও হয়েছিলো, গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে বলেছিলাম ওগো সমাজ দূষন কমাও।
শোনোনি, উল্টে মুখে ঠেসে গুঁজে দিয়েছো আরও দু’মুঠো গ্রীন হাউস গ্যাস।
হ্যালো, শুনতে পাচ্ছ , ঠুঁটো জগন্নাথ মনুষ্য সমাজ? আমি পৃথিবী স্বয়ং। প্রকৃতি আমি।
নিজের সমস্ত কিছু উজাড় করে দিয়েছি,
বদলে কি পেয়েছি?
বিশ্ব উষ্ণায়ন, জল দূষন, দূষিত বায়ু, শব্দকল্পদ্রুম , আমার মাটি দূষণ , হিমবাহ গলন আরও কতকি,
যার প্রত্যেকটাই তোমাদের মানব শরীরের মতো আমার অঙ্গ নয়তো শিরা-অস্থি-মজ্জা।

এটাও পড়তে পারেন কবর খোঁজে প্রেম: এক অতৃপ্ত আত্মার কথা

হাড় পাঁজর ভেঙে পঙ্গু করে দিয়েছো দিনে দিনে।
আর রইলো বন্যপ্রাণী সংরক্ষনের নাম খেজুরে আলাপ !
বলেছিলাম, দূষন রোধের জরুরি বৈঠক নামের পিকনিক, বন্ধ করো।
মানোনি, খাতায় কলমে নিয়ম করে আরও কয়েকটা ঝা চকচকে ফ্ল্যাট তুলে মুখের ওপর দরজা বন্ধ করেছো,
পরিসংখ্যানে গিয়ে কাজ নেই কারণ , আমি নির্বাক।
আর তাতেই বিরোধী পক্ষের উকিল করে দেবে বাজিমাত।
তবে করোনা আমার বন্ধু নয়, আমার সহমর্মীও নয়।
বলতে পারো শাপে খানিক বর পেয়েছি আমি।
তবে জানো তোমাদের আনন্দ খুশি কয়েকদিনের জন্যে কেড়ে নিয়ে আমাকে বহুগুন দূষন মুক্ত করেছে ওই করোনা,
স্বচ্ছ জলে পরিমিত অক্সিজেন পেয়ে বাঁচছে জলজরা,
তোমরা জানো? আমার ফুসফুস ওজোন স্তরে যে ক্ষত তোমরা করেছিলে , আজ তোমাদের স্তব্ধতা অনেকটা সারিয়ে তুলেছে।
আমি হয়তো আরও বেশ কিছুদিন বাঁচবো।
তবু আমি ভালো নেই,
সন্তানদের কষ্টে কোনো মা ভালো থাকেনা, থাকেনি
এ অসুখ আমার
তোমরা এতদিনে বেশ বুঝেছ যে
দু মুঠো খাবার, পানীয় জল আর মুক্ত বাতাসই যথেষ্ট বেঁচে থাকার জন্যে।
অত্যাধিক আরাম নাইবা করলে,
নিজেরা একটু সচেতন হও
আমাকে বাঁচাও, তোমরা বাঁচো
মনের মধ্যে বিশ্বাস রাখো
“আমরা করবো জয়, আমরা করবো জয়, আমরা করবো জয় নিশ্চয়।”

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *