আজ সকালে, নানা আজ ভোরের মধ্যেই এ তল্লাট ছেড়ে পালাতে হবে। আজ না পারলে হয়তো আর কোনোদিনই যাওয়া হবেনা।
কাল থেকে একনাগাড়ে বৃষ্টি পড়ে চলেছে, এই সরু গলিতে। এখানে এক বালতি জল পড়লেই জল জমে যায়, বর্ষাকালের কথা আর নাইবা বললাম। সারা গলি জুড়ে ঘোলাটে জল, সামনের রক্-দালানটাও জলে পুরো ভিজেকাক। রাস্তায় মাঝে মাঝে কয়েকটা বড় গাড়ির আওয়াজ আসছে, বোধহয় মেইন রোড থেকে। এবার একটু একটু করে এগোতে হবে।
গলিতে প্রায় এক হাঁটু জল জমেছে, নেড়িকুত্তাগুলো একটু উঁচু জায়গা পেয়ে সব গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে। হাড়গিলে পাগলিটা কোথায় গেল এই ভোরে কে জানে!
আকাশ এখনো বেশ অন্ধকার, বৃষ্টির ছাঁট আর ভারি হাওয়া এখনো কমেনি। রাস্তার বাতিগুলো যেন কোনোমতে জ্বলছে, আর আশেপাশের বাড়িগুলোকে জাগিয়ে রেখেছে। কেন ভাই? এই পরিবেশে ঘুমোলেই তো পারে।
জানিনা কেন হঠাৎ মনে হচ্ছে যে ওরা আড়চোখে দেখার চেষ্টা করছে। বন্ধ জানলার কাঁচগুলো যেন কিসব বলাবলি করছে…
একবার ফিরে দেখি বাড়িটার দিকে। সব ফ্ল্যাটগুলোর থেকে ফ্যানের শব্দ আসছে, শুধু ওই ঘরটায় নেই। হ্যাঁ, ওটাই আমার ঘর― ওই যে খোলা জানলার গ্রিলে পর্দাটা কেমন মাথা ঠুকছে; আর ওই যে, ওই তো ঝুলছে, ঝুলে আছে আমার নিথর দেহটা! তাও এর মধ্যেই মুখে বেশ শান্তির ছাপ…!!
না, আর ঘুরে তাকানোর সময় নেই। আর না, এবার পারলে দৌড় লাগাতে হবে। সকালের আগেই পালাতে হবে, হবেই।।
Leave a Reply