এখন দেশে নানাপ্রকার সমস্যা দেখা যায়। মূলত উচ্চবর্ণ- নিম্নবর্ণের ভেদাভেদ। যা সেই প্রাচীনকালের হলেও, এখনও তার ছাপ থেকে গেছে। ঊনবিংশ শতাব্দী তে নগরায়ন-এর প্রাধান্য থাকা সত্বেও। হ্যাঁ! এসব শহরাঞ্চলে এই বর্ণবিদ্বেষ খুব একটা না থাকলেও, শহরের বাইরে তার প্রভাব তীব্র। আর, আর্টিকল 15 এই প্রাসঙ্গিকতাকেই তুলে ধরেছে। গত শুক্রবার মুক্তি পায় এই ছবি। পরিচালক অনুভব সিনহা। মুখ্যচরিত্রে আয়ুষ্মান খুরানা।
সদ্য আই পি এস পরীক্ষা দিয়ে এক গ্রাম্য এলাকার থানায় পুলিশ ইন-চার্জ হয়ে আসে আয়ান রঞ্জন(আয়ুষ্মান খুরানা)। এসেই সেখানকার পরিবেশে মানিয়ে নিতে সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। ইতিমধ্যে তিন জন মেয়ে নিখোঁজ হওয়ায়, সেই তদন্তের দায়িত্ব এসে পড়ে আয়ানের ওপর। লালগাঁও নামে রচিত একগ্রামে পুরো ঘটনার নিরীক্ষণ চলতে থাকে। পরদিন সকালে, তিন জনের মধ্যে দুজনের মৃতদেহ একগাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় খুঁজে পাওয়া যায়। তাই তাদের নিখোঁজ হওয়ার পেছনে আরো বড় রহস্য লুকিয়ে আছে -এ বিষয়ে নিশ্চিত আয়ান। তৃতীয় মেয়েকে খোঁজার জন্য সর্বস্বদিয়ে চেষ্টা শুরু করা হয়।
এই ছবিতে অন্যান্য চরিত্র ব্রহ্মদৎ ও জাতভ (মনোজ পাহা ও কুমুদ মিশ্র ) সমাজের বেশ গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো তুলে ধরেন। চিরকাল শহরে থাকা আয়ান গ্রাম্য এইসব ভেদাভেদ সম্পর্কে অজ্ঞ। সে অক্লান্তভাবে এই তদন্ত করতে চান, কিন্তু তাকে পদে পদে বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়। স্থানীয় জাতভ বোঝান যে, এসবের পেছনে সময় নষ্ট না করে, তদন্ত থামিয়ে দেওয়াই ভালো। কারণ সেখানকার সব তাবড় তাবড় নেতারা এসবের শেষে আয়ানের মতো বড় অফিসারের বদলি করে দেয়, আর বাকিদের খুন।
অনুভব সিনহার আগের ছবি মূল্ক এর মতো এই ছবিতেও তার কাজ খুব নিখুঁত। আর সত্যি থ্রিলার চলচ্চিত্র তৈরিতে তিনি পারদর্শী। সামাজিক বাধানিষেদ থাকার যে কুসংস্কার তা দর্শকদের বিচলিত করতে বাধ্য।
ছবির সিনেমাটোগ্রাফার ইয়ান মুলিগান গল্পের গাম্ভীর্য অনুসারে হাই কন্ট্রাস্টে শুট করেছেন। মাঝে মধ্যে ধূসর বর্ণের প্রয়োগ( গ্রে স্কেল) অনবদ্য। কম ঔজ্জ্বল্য এই ছবিতে অন্য মাত্রা এনেছে।
আর পারফরম্যান্স এর দিক দিয়ে আয়ুষ্মান তার অন্যতম কাজ করেছেন। সাথে কুমুদ মিশ্র, মনোজ পাহা,মোহাম্মদ জিসান আয়ুব ( ছোট চরিত্র হলেও) তাদের নাট্যকৌশল দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বাধ্য।
আর্টিকল 15 সেই হাসিখুশি, স্বাচ্ছন্দ্য না আনলে, খুব গম্ভীরভাবে ভিত্তিহীন সামাজিক আচার-রীতির প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে।