গৌড় নবাব আমলে অভিন্ন বাংলার রাজধানী হিসেবে অনেক গৌরবময়। ভ্রমণকাহিনী বা ট্রাভেলগ যখনই পড়ি, মন থেকে জায়গাটা অনুভব করার একটা অদম্য উৎসাহ আমায় নাছোড়বান্দা হয়ে তাড়া দেয়, ” ভাই, এবার জায়গাটা ঘুরে আসতে হবে”। পড়াশোনার চাপে সেরকম ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠে না, কিন্তু এবার পূজোর পর ঘুরে এলাম, বহুপ্রাচীন গৌড়।
বলে রাখা ভালো, যাদের জানা নেই, গৌড় নবাব আমলে অভিন্ন বাংলার রাজধানী হিসেবে অনেক গৌরবময়। সেই সুবাদেই বেশ দর্শনীয় প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আজও জায়গাটার মাহাত্ম বজায় রেখেছে। তবে রাজধানী হিসেবে নয়, গৌড় পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
বিজয়ার পরেরদিন বেরিয়ে পড়লাম বাইক নিয়ে কয়েকজন বন্ধুদের সাথে। আজকাল গুগল ম্যাপস-এ একবার সার্চ করলেই সেখানে পৌঁছনোর উপায় পাওয়া যায়। তবুও বলে রাখি মালদা টাউনের দক্ষিনদিক ঘেঁষে এই ধরুন ন্যাশনাল হাইওয়ে 34 ধরে এগোতে থাকলে কিছুদূর গিয়ে একটা তিন মাথার মোড়। সেখান থেকে বামদিকের রাস্তা বরাবর গেলে আপনি গৌড় এ পৌঁছে যাবেন।
যদি আপনি পাবলিক ট্রান্সপোর্ট নিতে চান তবে একটু অসুবিধেয় পড়তে হতে পারে। আমার মতে গাড়ি রিজার্ভ করে যাওয়া টা বেশি সুবিধার।
গৌড় এ ঢুকে প্রথমেই যা দেখতে পাবেন, তা হলো বড়ো সোনা মসজিদ বা বারো দুয়ারী ( বারো টি দুয়ার )
গৌড়ের স্থাপত্য কীর্তিগুলির মধ্যে এটি সবথেকে বড়। সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ এটির নির্মাণ কার্য্য শুরু করলেও তিনি এ কাজ সমাপ্ত করে যেতে পারেননি। তাঁর পুত্র সুলতান নাসিরউদ্দীন (নুসরাত শাহ) ১৫২৬ সালে এই কাজ সম্পন্ন করেন। এর উচ্চতা ২০ ফুট, দৈর্ঘ্য ১৬৮ ফুট ও প্রস্থ ৭৬ ফুট।
এরপর এগিয়ে গেলে একের পর এক স্থাপত্য আপনার মন কাড়বে। এদের বিবরণ নীচে বিস্তারিত আকারেই লিখলাম, এতে এগুলো সম্পর্কে তথ্য গুলো জানতে সুবিধে হবে।
দাখিল দরওয়াজা
এটি গৌড় দুর্গে প্রবেশের প্রধান দ্বার। এটি ৬০ ফুট উঁচু ও ৭৩ ফুট চওড়া এই দরওয়াজাটি ছোট ছোট ইঁট ও পাথর দিয়ে তৈরী করেছিলেন সম্ভবতঃ সুলতান রুখনউদ্দীন (বারবক শাহ)। ভিতরের পথটি বেশ চওড়া, তাই সওয়ারী সহ হাতি অনায়াসে এই দরওয়াজা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে পারত। এই দরজার দুপাশ থেকে তোপধ্বনি করে সুলতান ও উর্ধতন রাজপুরুষদের সম্মান প্রদর্শন করা হত। তাই এই দরওয়াজার আর এক নাম সেলামী দরওয়াজা।
লোটন মসজিদ
কোতোয়ালি দরওয়াজা থেকে ১ কি.মি. উত্তরে রয়েছে এই লোটন মসজিদ। এখানে ইঁটের উপর রং-বেরঙ্গের মীনার কারুকার্য ছিলো, বর্তমানে যার প্রায় কিছুই অবশিষ্ট নেই, তবে খুব ভাল করে দেখলে বোঝা যায় এর সামান্য অস্তিত্ব । ছাদের গম্বুজের নিচের দিককার সৌন্দর্য অপূর্ব।
লুকোচুরি দরোয়াজা
১৬৫৫ খ্রীষ্টাব্দে বাংলার সুবেদার শাহ সুজা গৌড় দুর্গে প্রবেশ করবার জন্য এই দরোয়াজাটি তৈরি করেন। উচ্চতা ৬৫ ফুট ও চওড়া ৪২ ফুট। দুইদিকে প্রহরীদের ঘর ও ওপরে নহবতখানা আছে।
কদম রসুল মসজিদ
লুকোচুরি ফটক বা দরোয়াজা দিয়ে গৌড় দুর্গে ঢোকার পর ডানদিকে রয়েছে কদমরসুল সৌধ। এখানে রয়েছে হজরত মহম্মদ(সাঃ) এর পদচিহ্ন, যেটা সুদূর আরব থেকে পীর শাহ জালাল তাবরেজী এনেছিলেন পান্ডুয়া-র বড় দরগায়, সেখান থেকে সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ এটিকে নিয়ে আসেন গৌড় দুর্গে। তাঁর পুত্র সুলতান নসরত শাহ ১৫৩০ সালে একটি কষ্ঠি পাথরের বেদির ওপর পদচিহ্নটি স্থাপন করে তার ওপর কদম রসুল সৌধ নির্মাণ করেন।
চিকামসজিদ
এক গম্বুজ বিশিষ্ট এই স্থাপত্যটি ১৪৫০ সালে তৈরি। পূর্বে এটি সম্ভবত সমাধিস্থল ছিল। তবে কথিত আছে যে সম্রাট হুসেন শাহ এটিকে কারাগার হিসেবে ব্যবহার করতেন। স্থাপত্যটির ভিতরের দেয়ালে অনেক হিন্দু দেব দেবীর মূর্তি রয়েছে। পরবর্তী কালে এখানে চামচিকার উপদ্রব শুরু হলে এর নাম হয় চামকান মসজিদ বা চিকা(চামচিকা থেকে) মসজিদ।
আপনি যদি সকালের দিকে বেরোন, তবে বিকেলের মধ্যে আপনার গৌড় দেখে ফিরতে পারবেন।
শীত কালে গেলে রোদ টাকে বেশ আয়েস করে উপভোগ করতে পারবেন। বলাই বাহুল্য, গৌড় এখন অন্যতম পিকনিক স্পট। তবে মূল স্থানের বাইরে করতে হয় যাবতীয় কার্যক্রম।
Following the resounding success of the inaugural edition, SVF Musicproudly announces the arrival of the…
Amidst ongoing speculations regarding the leading lady opposite Shakib Khan in the upcoming film 'Toofan',…
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
In a spectacular celebration coinciding with the birthday of the iconic actor Prosenjit Chatterjee, the…
হিমেশ রেশামিয়ার পর সুরাশা মেলোডিজ থেকে অনুষ্কা পাত্রর নতুন গান পুজো আসছে মানেই বাঙালির নতুন…
The highly awaited trailer of grand Puja release, "Dawshom Awbotaar", produced by Jio Studios and…
This website uses cookies.