|| আরো একবার হাতটা ছুঁয়ে দেখ (পর্ব-৩) ||
বাড়ি ঢুকে বসার ঘরে এসে চমকে গেল পালক। পাড়ার দু-তিন জন কাকুও উপস্থিত। মা বিকৃত মুখে বলল, “কোথায় থাকিস আজকাল? ফোনটা যখন ধরবিনা ঠিক করেছিস, রাখার প্রয়োজন কী?”
পাশের বাড়ির কাকু একটু এগিয়ে এসেই বলল, “আরে তেমন কিছুনা। তোর বাবার মাথাটা একটু ঘুরে গেছিল!”
বাবার মাথা ঘুরে গেছিল? আর ও? ওর পুরোনো দুঃখ নিয়ে বসেছিল। ফোনটা কই? ব্যাগ হাতড়ে ফোন বের করে দেখল ফোনটা সুইচড অফ।
পালক থমথমে মুখে বাবার কাছে গেল। না, আজ সে অপরাধী। তার বাবার কাছে থাকা উচিৎ ছিল। কিন্তু সে সেটাও পারেনি। পালকের চোখের জলটা মুছিয়ে দিয়ে বাবা বলল, “খেয়েছিস কিছু?”
পালক কিছু না বলে বেরিয়ে গেল। চোখ থেকে পড়তে লাগল এক বিন্দু জলের ফোঁটা। যেতে যেতে পালক শুনল বাবা বলছে, “ওকে কিছু বলো না তোমরা! জানোই তো মুখ ফুটে কিছু চায়না কখনো। মেয়েটার যে কষ্ট হয়!”
ঘরে ঢুকে নিজের অজান্তেই পালকের চোখে জল! কষ্ট হয়! কী কষ্ট? কার জন্য এতো কষ্ট পালকের? বাবার অসুস্থতায় পাশে না থাকা? নাকি নিজেকে হারানোর যন্ত্রণা?
পালক তখন অনেক ছোটো। একটা টিয়া রঙের শাড়ি কিনে দেওয়া হয়েছিল দিদিকে। দিদির জিনিসে পালকের হাত দেওয়া বরাবর বারণ। পালকের খুব ইচ্ছে হয়েছিল সরস্বতী পূজোয় শাড়িটা পড়তে। কিন্তু সেটা পারেনি পড়তে। মাকে একবার বলায় মাও বলেছিল, “তুই শাড়ি পড়বি! তো আমারটা পড়! মলিরটা পড়ার কি দরকার! নতুন শাড়ি ওর!” পালক জানত মা দিদিকে ভয় পায়। আর কখনো কিছু বলেনি পালক। পালক দেখেছিল সরস্বতী পূজোর আগের দিন বাবা একটা একই রকম শাড়ি এনে দিয়েছিল ওর জন্য। সেদিন ওর মনে হয়েছিল এই মানুষটা ওর না বলা সব কথা বুঝতে পারে! আজও পালক অসুস্থ বাবাকে দেখে সেটাই মনে করল। আচ্ছা, বাবাও যদি না থাকে! পালককেও কি সবাইকে নিজের কথা বলে বোঝাতে হবে! নিজের কথা কী করে বলে? দিদি কী করে বলতো? বড্ড অসহায় লাগে পালকের এই সময়গুলোয়। হঠাৎ দেখল মা দরজার কাছে দাঁড়িয়ে।
— পলি?
— হুম, বলো।
— তোর বাবার ক্যন্সার! মানুষটা হয়তো আর বেশি দিন নেই। তাই এর মধ্যে তুই যদি…
— “মা, এসব কী বলছ তুমি! চুপ! এসব বোলো না। সব ঠিক হয়ে যাবে। ঠিক হয়ে যাবে!
কথাটা নিজেরই কেমন সান্ত্বনা বাক্যের মতন শোনালো পালকের। ঠিক কি কিছু হয়? আস্তে আস্তে আমরা আরো জটিল কিছুর মধ্যে ঢুকে পড়ি। জীবনটা সিঁড়িভাঙ্গা অঙ্কের মতো ছোটো হয়না, আরো জটিল হয়। অঙ্কগুলো মেলে না কিছুতেই। পালকের আজ খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে। খুব কাঁদতে। জীবনের সব না বলা কথাগুলো বলে খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে। কাকে বলবে সব কথা! অহর্ষিকে? নামটা মনে পড়লে আজও শিরা-উপশিরায় একটা হরমোনের দাপাদাপি অনুভব করে পালক। না, বাবা বলেছিল অতীত মনে রাখতে নেই পালক। বর্তমান নিয়েই এগোতে হয়। অতীত ভালো বা মন্দ তাতে কারো কিছু যায় আসে না। পালকও বর্তমান নিয়েই ভাববে। কাকে ফোন করবে? একটাই নাম মনে পড়ল বিহান! বিহানকেই ফোন করবে।
(চলবে)
The vibrant city of Kolkata is set to host an extraordinary musical event as renowned Indian music…
In a heartwarming ode to friendship and the unifying spirit of Pujo, SVF Brands has…
The year 2024 has not been what I had planned so far. Everything went downhill.…
Following the resounding success of the inaugural edition, SVF Musicproudly announces the arrival of the…
Amidst ongoing speculations regarding the leading lady opposite Shakib Khan in the upcoming film 'Toofan',…
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
This website uses cookies.