শ্রীকৃষ্ণ যে মস্তকে ময়ূরের পালক ধারণ করেন, সেটার কারণ বহু লোকের জানা আছে, আবার হয়তো অনেকের জানা নেই। অনেক কাহিনী ও কত কথা জড়িত আছে এই ময়ূরের পালক নিয়ে। আজ আমি দুটি প্রচলিত কাহিনী বলার চেষ্টা করবো। প্রথমত, বনবাসে থাকা কালীন একদা সীতামাতার খুব জল পিপাসা পেয়েছিল। কিন্তু শ্রীরাম চন্দ্র দূর দূরন্ত পর্যন্ত শুধু জঙ্গলই দেখতে পেলেন। তখন উনি প্রকৃতির কাছে প্রার্থণা করলেন, হে প্রকৃতি আশেপাশে যেখানেই জল আছে দয়া করে আমায় সন্ধান দিন। তখন ওখানে এক ময়ূর এসে শ্রীরাম চন্দ্রকে বললেন, আগে একটু দূরেই জলাশয় রয়েছে। চলুন আপনাদের নিয়ে যাচ্ছি। যাতে রাস্তা ভুল না হয়, তাই আমি আমার পালক একটা একটা করে ফেলে দিয়ে চলে যাব। আপনারা ওটার সাহায্যে জলাশয় পর্যন্ত যেতে পারবেন।
আপনারা তো সবাই জানেন, ময়ূর তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে পালক তোললে তার মৃত্যু অনিশ্চিত। তাই হল, ময়ূর মৃত্যুর প্রথমে ভেবেছিল, সে কত ভাগ্যবান যে জগতের সবার পিপাসা দূর করে, সেই প্রভুর পিপাসা দূর করার ভাগ্য হল। ভগবান রাম ময়ূরকে বললেন, আমার জন্য যে পালক তুমি ফেলে এলে, সামনের জনমে আমি সেটা মস্তকে ধারণ করব।
দ্বিতীয়ত, জগৎ সংসারের প্রতিপালক শ্রী বিষ্ণুর অবতার মনমোহন শ্রীকৃষ্ণ, তাঁর মোহনীয় রুপে বিমুগ্ধ সমস্ত ভক্তগণ। ঘনকালো কৃষ্ণ বর্ণ, ওনার লাল ঠোঁটে সব সময় যেন দুষ্টু বাঁকা হাসি লেগে আছে। শ্রী কৃষ্ণের রুপ বর্ণনার চুম্বক অংশ হল, তাঁর মাথার শোভা পাওয়া ময়ূরের পালক। বেশিরভাগ ভক্তের কাছে ময়ূরের এই পালক প্রায় ততটাই দর্শনীয়, যতটা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং।
একদিন বিকেলে বালক গোপাল, গোবরধন পর্বতের পাদদেশে সঙ্গীদের নিয়ে হাজির হলেন গোচারণে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর সঙ্গীরা বৃক্ষের কোমল ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়ে। নটখট গোপাল পরিকল্পনা করলেন, তাদের নিদ্রা ভঙ্গ করার। এবার কৃষ্ণ তাঁর ঠোঁটের অমৃত, বাঁশিতে ঢাললেন। গম্ভীর অথচ ধীর ছন্দ যুক্ত মধুর রাগ। এই সুমধুর শব্দ তরঙ্গ গোবরধন পর্বতের আশেপাশে বিস্তৃত হতে থাকলো এবং পর্বতের আশেপাশে থাকা ময়ূরদের মোহিত করলো। তারা খুশিতে গাইতে আরম্ভ করলো এবং এই মোহন বাঁশি থেকে নির্গত অনাদিত শব্দ তরঙ্গ, ময়ূরদের নৃত্য করতে উৎসাহিত করলো। কৃষ্ণ যিনি সমস্ত শিল্প কলার উৎস, তিনি ময়ূরদের নাচ দেখে খুশি হলেন এবং তাদের উৎসাহিত করলেন।
একসময় তাদের ধ্বনি প্রতিধ্বনি প্রভেদস্বন্ন হয়ে গেল এবং উত্তেজনায় পাখা খুলে নৃত্য করতে লাগলো। সব ময়ূরেরা যখন নৃত্য করছিল, তখন ময়ূরদের রাজা শ্রী কৃষ্ণের নিকট গিয়ে তাঁর চরণ স্পর্শ করে একটা শব্দ করলো। শ্রীকৃষ্ণ বুঝলেন, এটা ময়ূর রাজার ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং অনুরোধ তিনিও যেন তাদের সাথে নাচেন। শ্রীকৃষ্ণ তাদের অনুরোধ স্বীকার করলেন এবং তাদের মাঝে গিয়ে দাঁড়ালেন। ময়ূরদের মত তিনিও নৃত্য শুরু করলেন। ধীরে ধীরে লয় বাড়ালেন এবং ময়ূররাও তাদের পদ সঞ্চালনের সাথে তাল মেলাতে লাগলেন। শ্রীকৃষ্ণ তাদের সাথে নৃত্য করায় তারা খুব অভিভূত ছিল। এই অনুভূতিতে কয়েকটা ময়ূর মূর্ছা গেল।
গোবরধন পর্বতের সমস্ত পশু ও রাখালগণ জাদু মুগ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। অনেকক্ষন নৃত্য করে ময়ূরেরা নৃত্য থামায়। এরপর শ্রীকৃষ্ণ নিজের লয় ছন্দে নৃত্য শুরু করলেন। কয়েকদিন পর যেদিন তিনি থামলেন চারিদিক তখন নিস্তব্ধ। ময়ূরের রাজা অতি বিনয়ের সঙ্গে মাথা নত করে বললেন, আপনি আমাদের এক আনন্দ উৎসব উপহার দিলেন। আমাদেরও উচিৎ আপনাকে গুরু দক্ষিণা দেই। আপনি আমাদের একমাত্র সম্বল পালক গ্রহণ করুন। এরপর পরমানন্দে অশ্রু বিসর্জন দিয়ে, অনেকগুলো স্বর্গীয় পালক ত্যাগ করলেন এবং প্রার্থণা করলেন তিনি যেন এই পালক শীরে ধারণ করেন। মঞ্জুর হল প্রার্থণা।
এটাও পড়তে পারেন : পোষ্য প্রেম: ভালোবেসে পোষ্য এর স্মৃতিচারণায়
সেই থেকেই শ্রীকৃষ্ণের মস্তকে শোভা পায় ময়ূরের পালক।বলা হয় সাতটি রঙের সবকটি রঙ উপস্হিত থাকে ময়ূরের পালকে, তাই মানা হয় এটি ধারণ করে, শ্রীকৃষ্ণ জীবনের সব রং ধারণ করার প্রতীক হন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সারা বিশ্বকে ধারণ করে আছেন। তাঁর ওপার লীলায় আমরাও আচ্ছন্ন।
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
In a spectacular celebration coinciding with the birthday of the iconic actor Prosenjit Chatterjee, the…
হিমেশ রেশামিয়ার পর সুরাশা মেলোডিজ থেকে অনুষ্কা পাত্রর নতুন গান পুজো আসছে মানেই বাঙালির নতুন…
The highly awaited trailer of grand Puja release, "Dawshom Awbotaar", produced by Jio Studios and…
আসছে Klikk Originals এর আগামী ওয়েব সিরিজ। জন হালদার এর প্রযোজিত ও পরিচালিত রোমহর্ষক থ্রিলারNH6…
On the auspicious occasion of Ganesh Chaturthi, Bengal's Superstar Jeet Unveils the First Look of…
This website uses cookies.