নভেম্বরর শেষ বঙ্গে ঢুকেই পড়লো শীত। বেশ কয়েকদিন ধরেই ছড়িয়ে পড়েছে শীতের আমেজ। সকল পুজো পার্বণ উৎসব শেষ করে এবার বাঙালির শীতকাতুরে হওয়ার পালা। কিন্তু বাঙালির তো বারো মাসে তেরো পার্বণ। শীত আসার সাথে সাথে সঙ্গে করে নিয়ে আসে নতুন গুড়, নতুন ধানের চাল, পিঠে , পুলি , পায়েস ইত্যাদি সুস্বাদু খাবারের সুঘ্রাণ। হেমন্ত কালে নতুন ফসল ঘরে ওঠে ।গ্রামের মাঠ ভরে যায় সোনালী রঙের ধানে । অগ্রহায়ণ মাসে এই ধান তোলার মধ্যে দিয়ে পালিত হয় বাংলার কৃষি ক্ষেত্রের ঐতিহ্যমন্ডিত উৎসব নবান্ন। অর্থাৎ নব অন্ন। নতুন আমন ধানের চাল ঘরে ওঠার সাথে সাথে বঙ্গপ্রকৃতি মুখরিত হয় নবান্ন উৎসবের আনন্দে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান , বীরভূম প্রভৃতি অঞ্চলে এই উৎসব পালিত হয় আর কৃষকের মুখে হাসি ফোটে সোনালী ফসল ঘরে আসার আনন্দে। ঋতুবৈচিত্রের এই দেশে চিরাচরিত শস্যউৎসব নবান্ন আমাদের সংস্কৃতির পরিচায়ক।গ্রাম বাংলার আবহাওয়াতে মিশে যায় কৃষক সম্প্রদায়ের খুশি আনন্দ হৈচৈ এর সুর। নবান্ন উৎসব নিয়ে বহু কবি সাহিত্যিকদের কলমে উঠে এসেছে অনেক গান কবিতা ইত্যাদি লেখনী। ধান ভাঙার গান ভেসে বেড়ায় গ্রামের বাতাসে।
এটাও পড়ুন : অনুভব ছুঁয়ে থাক আমাদের সবটুকু ঘিরে
জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে নবান্ন কে কেন্দ্র করে সামাজিক মেলবন্ধন ও দৃঢ় হয়ে ওঠে।
এই লোকউৎসবের মধ্যে মিশে আছে বিশেষ এক লৌকিক প্রথা ও বিশ্বাস।নতুন গুড় নতুন ধানের চাল গুঁড়ো দিয়ে পিঠে বানিয়ে সেটা কাকের উদ্দেশ্যে নিবেদন করতে হয়। মানুষের বিশ্বাস এর মধ্যে দিয়ে এই খাবার আমাদের স্বর্গীয় পূর্বপুরুষের কাছে পৌঁছে যায়। হিন্দু রীতি অনুযায়ী নতুন ধান উৎপন্ন হওয়ার সময় পূর্বপুরুশষগন অন্ন প্রার্থনা করেন। বিশেষ এই প্রথা কাকবলী নামে পরিচিত।নতুন চাল, কলা, গুড় , নারকেল কাককে খাওয়াতে হয়। এই নিয়ে অনেক ছড়া ও প্রচলিত আছে গ্রামবাংলায়। শুধু কাকবলী নয় বিভিন্ন লৌকিক প্রথা বিশ্বাস বেঁচে আছে নবান্ন উৎসবের মধ্যে দিয়ে।শোনা যায় নবান্নে নাকি লক্ষ্মী পুজো ও হতো।খেটে খাওয়া কৃষককুল এই আনন্দে সামিল হয়।কাকবলী, লক্ষ্মী পুজো এসবের পরেই ঘরের সব সদস্য নতুন ধানের চাল মুখে তোলে।
ঘরে ঘরে তৈরি হয় নতুন ধানের চালের গুঁড়ো দিয়ে হরেক পিঠে পুলি । ধান কাটার উৎসবের সাথে চলে খাওয়া দাওয়ার বাহার।
নতুন গুড়ের পায়েসের গন্ধে আকাশ বাতাস মাতাল হয়ে ওঠে। প্রতিবেশী দের মধ্যে একে অপরের বাড়িতে মিষ্টি পিঠে পায়েস দেওয়া নেওয়া চলে।নবান্ন উপলক্ষ্যে গ্রামে গ্রামে বসে মেলা।মেলায় আট থেকে আশি সব মানুষের ভিড় জমে।পালাগান থেকে হরেক রকম খাবার জিনিস সবই মজুত থাকে মেলায়। পিঠে পুলির মধ্যে একটা বিশেষ পিঠে হলো জাউ পিঠে। খেজুরের রসের মধ্যে নতুন চালের গুঁড়ো ও দুধ দিয়ে আগুনের আঁচে জ্বাল দিতে হয় । মিশ্রণ টিকে নাড়িয়ে যেতে হবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে তলা থেকে পুড়ে না যায়। বেশ কিছুক্ষণ জ্বাল দেওয়ার পর একটা বড় থালায় সেটিকে ঢেলে নিতে হবে এবং ঠান্ডা হতে দিতে হবে। ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার পর তক্তির আকারে ছুরি দিয়ে কেটে নিতে হবে। খুব সহজ পদ্ধতিতে কম খরচে তৈরি হতো জাউ পিঠে। যা ছিলো নবান্নের পিঠের মধ্যে অন্যতম। শুধু গ্রামের মানুষ নন শহরের মানুষ রাও এখন নবান্ন উৎসব পালন করে থাকেন। গ্রাম শহর সকল মানুষ মিলেমিশে উৎসবে সামিল হয়।এটি ঋতুকেন্দ্রিক উৎসব প্রতি বছর ঘুরেফিরে এই হেমন্তকালে নতুন ফসল ঘরে তোলার আনন্দে মাতোয়ারা হয় কৃষককুল।নবান্ন শুধু শস্যের উৎসব নয় এটা অসাম্প্রদায়িক লোকউৎসব ও বটে।
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
In a spectacular celebration coinciding with the birthday of the iconic actor Prosenjit Chatterjee, the…
হিমেশ রেশামিয়ার পর সুরাশা মেলোডিজ থেকে অনুষ্কা পাত্রর নতুন গান পুজো আসছে মানেই বাঙালির নতুন…
The highly awaited trailer of grand Puja release, "Dawshom Awbotaar", produced by Jio Studios and…
আসছে Klikk Originals এর আগামী ওয়েব সিরিজ। জন হালদার এর প্রযোজিত ও পরিচালিত রোমহর্ষক থ্রিলারNH6…
On the auspicious occasion of Ganesh Chaturthi, Bengal's Superstar Jeet Unveils the First Look of…
This website uses cookies.