কাদম্বিনী গাঙ্গুলীর জন্ম ১৮ই জুলাই ১৮৬১ তে বিহারের ভাগলপুরে। তাঁর মূল বাড়ি ছিল বর্তমানে বাংলাদেশের বরিশালের চাঁদসিতে। তাঁর বাবা ব্রজ কিশোর বসু ছিলেন ভাগলপুর স্কুলের হেডমাস্টার। তিনি ছিলেন ব্রাহ্ম এবং নারী শিক্ষার অত্যন্ত উৎসাহী। সেখানে তিনি নারী মুক্তির জন্য, ভাগলপুর মহিলা সমিতি নামে একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। তাঁর পিসতত দাদা, কলকাতা হাই কোর্টের ব্যারিস্টার মনমোহন ঘোষ নারী শিক্ষা প্রসারের কান্ডারী ছিলেন। বাবা দাদার প্রভাব পরেছিল কাদম্বিনী দেবীর মধ্যে। উচ্চশিক্ষার জন্য ব্রজ কিশোর বসু মেয়েকে ভাগলপুর থেকে কলকাতায় নিয়ে আসেন।
তৎকালীন সমাজ নারী শিক্ষাকে সুনজরে দেখতো না। কিন্তু তিনি সেটাকে অবজ্ঞা করে, ১৮৭৩ সালে তিনি মেয়েকে ভর্তি করান কলকাতার বঙ্গ মহিলা বিদ্যালয়ে। সেই বছরই স্কুলটি স্থাপিত হয়েছিল। সেখান থেকে ১৮৭৮ সালে প্রথম মহিলা হিসাবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় দ্বিতীয় শ্রেণীতে পাস করেন। তাঁর দ্বারাই প্রভাবিত হয়ে বেথুন কলেজ প্রথম এফ.এ এবং তারপর অন্যান্য স্মাতক শ্রেণী আরম্ভ করে। তিনি ১৮৮৩ সালে গ্র্যাজুয়েট হয়ে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েই, তাঁর শিক্ষক দ্বারকানাথ গাঙ্গুলীকে বিয়ে করেন। সেই বছরই তাঁর সঙ্গেই গ্র্যাজুয়েট হন আরো এক বাঙ্গালী মহিলা চন্দ্রমুখী বসু। এই দুই মহিলাই প্রথম ভারতীয় নারী যারা প্রথম গ্র্যাজুয়েট হন।বিশ্ববিদ্যালয়ে সমবর্তনে দুই মহিলার ডিগ্রি নেওয়া দেখতে, এতটাই ভিড় হয়েছিল যে, ভিড় সামাল দিতেই হিমসিম খেতে হয়েছিল।
চন্দ্রমুখী দেবী M.A পড়া শুরু করলেন কিন্তু স্নাতক হওয়ার পর কাদম্বিনী দেবী ডাক্তার হওয়ার মনস্থির করেন। সেই খবর ছড়িয়ে পরতে বেশি সময় লাগেনি। কলকাতার অভিজাত সমাজ নানা ভাবে তাকে ব্যঙ্গ করতে শুরু করে। তিনি যেন ডাক্তারি পড়তে না পারেন, তার জন্য চলে নানা প্রকার অপচেষ্টা কিন্তু ছাড়ার পাত্রী ছিলেন না তিনি। সমাজের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে, মেডিকেল কলেজে ভর্তি হলে, তখন শুধু রক্ষণশীল সমাজই নয়, তাঁর বিরোধীতা করতে থাকে মেডিক্যাল কলেজের কিছু স্টাফও। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রাজেন্দ্র চন্দ্র, তিনি ছিলেন স্ত্রী শিক্ষার ঘোর বিরোধী এবং খোলাখুলি প্রতিবাদ করেছিলেন। পরবর্তী কালে মেডিসিন পেপারে এক নম্বরের জন্য, কাদম্বিনী গাঙ্গুলীকে ফেল করিয়ে দিয়েছিলেন। তাকে ব্যাচেলার অফ মেডিসিন পরীক্ষায় ফেল করানো হয়। চিকিৎসক চন্দ্র, মৌখিক পরীক্ষাতেও কাদম্বিনী দেবীকে এক নম্বরের জন্য ফেল করিয়ে দেন।
অন্যদিকে রক্ষণশীল বাংলা পত্রিকা বঙ্গবাসী কাগজের সম্পাদক, মহেশ চন্দ্র পাল কাদম্বিনী দেবীর মাথা নত করার জন্য একটি কার্টুন প্রকাশিত করে, যাতে দেখানো হয়েছিল কাদম্বিনী তাঁর স্বামী দ্বারকানাথ গাঙ্গুলীকে নাকে দড়ি বেঁধে হিরহির করে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে। তার নিচে লেখা ছিল নানা ধরনের খারাপ মন্তব্য। মহেশ চন্দ্র পালের এমন ধরনের অসভ্যতাকে মোটেই প্রশ্রয় দেননি কাদম্বিনী এবং দ্বারকানাথ। তাঁরা আদালতে অভিযোগ জানান। বিচারে মহেশবাবুর ছয় মাস জেল ও ১০০ টাকা জরিমানা হয়। এরপর কাদম্বিনী দেবী ইংল্যান্ডে পারি দিয়ে L.R.C.S এবং J.F.P.S নামক দুটি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনিই ছিলেন ভারতের প্রথম মহিলা চিকিৎসক যিনি ডাক্তারি শাস্ত্রের একাধিক বিদেশি ডিগ্রি অর্জনের দুর্লভ ক্ষমতা দেখান।
সেখান থেকে ফিরে এসে মানুষের সেবায় মন দেন তিনি,চিকিৎসা করার জন্য ছোটে যেতেন গ্রামন্তরে।পাশাপাশি যোগ দেন রাজনীতিতেও ১৮৮৯ সালে তিনি এবং স্বর্ণকুমারী বসু যুগ্ম ভাবে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে বাংলার প্রতিনিধিত্ব। অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে শরীর তাঁর সঙ্গ দিচ্ছিল না। অবশেষে ১৯২৩ সালের ৩ রা অক্টোবর জরুরি কিছু অপারেশন সেরে বাড়ি ফিরেন। তিনি সামান্য বিশ্রাম নিয়ে ক্লান্ত হয়ে স্নান ঘরে ঢুকেন। সেখানেই সেরিব্রাল স্টোক হয়। আর চোখ খুলেন না।
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
In a spectacular celebration coinciding with the birthday of the iconic actor Prosenjit Chatterjee, the…
হিমেশ রেশামিয়ার পর সুরাশা মেলোডিজ থেকে অনুষ্কা পাত্রর নতুন গান পুজো আসছে মানেই বাঙালির নতুন…
The highly awaited trailer of grand Puja release, "Dawshom Awbotaar", produced by Jio Studios and…
আসছে Klikk Originals এর আগামী ওয়েব সিরিজ। জন হালদার এর প্রযোজিত ও পরিচালিত রোমহর্ষক থ্রিলারNH6…
On the auspicious occasion of Ganesh Chaturthi, Bengal's Superstar Jeet Unveils the First Look of…
This website uses cookies.