যুবসমাজ ও তার আন্তর্জাতিক পটভূমি

যুবসমাজ, যুব মানেই কিছু চাঞ্চল্য, কিছু উদ্দ্যম, বহুল উদ্দেশ্যের সমাহার। আর গোটা বিশ্ব পরিচালনায়, যুবসমাজ এর সুসক্ষমতা তীক্ষ্ম। সারা বিশ্বের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে, এই উদীয়মান সূর্যদের অস্তমিত হওয়া মানে সবটা ভারসাম্যহীনতায় ভোগা। তাই তাদের জন্য একটা বিশেষ দিনকে সাজিয়ে তোলা আবশ্যক।
১২ আগস্ট আন্তর্জাতিক যুবদিবস বা ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ ডে। তারুণ্যের বিকাশ ও উন্নয়নে ১৯৯৮ সালে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের ‘ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অব মিনিস্টার রেসপনসিবল ফর ইয়ুথ’। ১২ আগস্টকে ‘আন্তর্জাতিক যুব দিবস’ হিসেবে উদ্‌যাপনের কথা পেশ করেন। ঠিক পরের বছরই ১৯৯৯ সালে যুবসমাজ এর কথা মাথায় রেখে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক যুব দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সেই থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিনটি পালন করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক যুবদিবস হিসেবে। সারা বিশ্বে মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৮০ কোটি যুব, যা একালযাবৎ বৃহদাংশ। ১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত সাধারণ পরিষদ এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাধারণ পরিষদ উভয়েই ইয়ুথ দের ক্ষেত্রে তিনটি মূল বিষয়কে জোর দিয়েছে। সেগুলি হল অংশগ্রহণ, উন্নয়ন এবং শান্তি।
১৯৭৯ সালে সাধারণ পরিষদ ৩৪/১৫১ সংকল্পের মাধ্যমে ১৯৮৫ সালকে আন্তর্জাতিক যুব বছর হিসেবে ঘোষনা করেন। ১৯৮৫ সালে, ৪০/৪১ সংকল্পের দ্বারা জাতিসংঘের আইনসভা যুবসমাজ এর ক্ষেত্রে পরিকল্পনাকে যথাযথ অনুসরণের কথা বলেছেন এবং আন্তর্জাতিক যুব দিবস আনয়ন করেন।

জাতিসংঘের পরিকল্পনায় যুবসমাজ এর দশটি ক্ষেত্র। অর্থাৎ— শিক্ষা, কর্মসংস্থান, ক্ষুধা ও দারিদ্র্য, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, যুব সমাজে মাদকের অপব্যবহার, কিশোর-কিশোরী অপরাধ। তারপর অবসরের কর্মকাণ্ড, বালিকা, যুব, মহিলা এবং সমাজ জীবনে ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে যুবসমাজ এর পূর্ণ এবং কার্যকর অংশগ্রহণ বিষয়কে অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
খারাপ লাগে যে বর্তমান বিশ্বে ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী সমস্ত শিশু এবং কিশোর- কিশোরীর অর্ধেকেরও বেশি ন্যূনতম পড়াশোনা এবং সাধারণ জ্ঞানে মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। যদিও তাদের বেশিরভাগই বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে লোকদেখানোতে ভর করে। আগস্টের এই একটি দিনের ‘যুবদিবস বা ইয়ুথ ডে কি সেই ঘাটতি মেটাতে সফল হবে?
বর্তমান যুবসমাজ ডিজিটাল তরুণসমাজ নামে পরিচিত। সোস্যাল মিডিয়া নির্ভরশীল এই জনগোষ্ঠী লেখাপড়া কিংবা চাকরির বাইরে বেশির ভাগ সময়ই ব্যয় করে থাকে মোবাইল কিংবা ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে। ফলে আমরা যে ধর্মীয় উগ্রবাদিতা কিংবা মাদকাসক্তি থেকে তাদের রক্ষার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। সেখানে সাংস্কৃতিক জাগরণের গুরুত্ব এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। অথচ অতীতে এ দেশের তরুণরাই জাতীয় জীবনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব রেখে গেছেন। হয়তো আশাবাদী ভবিষ্যতে আবার তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে আর সেখানেই ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ ডে এর সার্থকতা থাকে যুবসমাজ উত্থানে।

Facebook Comments Box
Staff Writer

Editorial Team of LaughaLaughi

Recent Posts

Kolkata to Witness B Praak’s Mesmerizing Performance at ‘Kolkata Odyssey’ on October 20th

The vibrant city of Kolkata is set to host an extraordinary musical event as renowned Indian music…

8 months ago

Celebrating Friendship and Togetherness with Pujo Pujo Gondho

In a heartwarming ode to friendship and the unifying spirit of Pujo, SVF Brands has…

8 months ago

Frustration Turned To Calmness, Thanks To These Websites

The year 2024 has not been what I had planned so far. Everything went downhill.…

9 months ago

SVF Music Unveils April Edition of “Banglar Gaan Indies”

Following the resounding success of the inaugural edition, SVF Musicproudly announces the arrival of the…

1 year ago

Mimi Chakraborty and Nabila to Star Alongside Shakib Khan in ‘Toofan’

Amidst ongoing speculations regarding the leading lady opposite Shakib Khan in the upcoming film 'Toofan',…

1 year ago

Why Does a Rich Chicago Law Firm Keep Suing Indian Tribes?

This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…

2 years ago