বেলা ৪ টে । সুমন্তের ঘুম ভাঙল । যা গরম পড়েছিল , তবে তুলনামূলক ঠান্ডা আজ। ভোরে বৃষ্টি হয়েছিল তো । চোখ রগড়ে জানালা দিয়ে পাশের বাড়ির ছাদে একবার উঁকি মারলো সে । না বৌদি আসে নি এখনো । কাপড় জামা গুলো এখনো রোদ পোহাচ্ছে । যাইহোক, আড়মোড়া ভেঙে শান্তিপূর্ণ ভাবে শৌচ কার্য সম্পন্ন করে, এসে বসলো ডাইনিং এর চৌকিটায় ।
( ফোনে রিং )
-হ্যালো
ওপার থেকে সুমধুর গলায় তিন্নি – আসছিস তো ?
-কোথায় ?
-এই… মজা করবি না একদম । ভুলে গেছিস নাকি !
-আরে না না
-আমি ট্রেনে উঠে পড়েছি । আর মিনিট পনেরো লাগবে সরোবর পৌঁছতে ।
সরোবর বলতে রবীন্দ্র সরোবর । বিকেলে দেখা করার কথা আছে । সুমন্ত চটপট হাত মুখ ধুয়ে , পুরোনো জিন্সটা বার করলো । পুরোনো তো , তাই ভাব অনেকদিনের । একে অপরের সাথে মানিয়ে নিয়েছে , ওই আর কি ।কালো টি শার্ট আর জিন্স পরে পাড়ি এবার গন্তব্য পথে । রাস্তার মোড়ে একটাই অটো দাঁড়িয়ে ছিল । চেপে বসলো সুমন্ত ।
-কাকু সরোবর যাবে তো !
বেশ বোকা মনে হলো নিজেকে । গাড়িতে চেপে জিজ্ঞাসা করছি ।
-হ্যাঁ যাবে ।
-তো চলো ।
বিকট ভট্ ভট্ শব্দ করতে করতে অটো এগোচ্ছে । গত একসপ্তাহ দেখা হয়নি তিন্নির সাথে । কথা হয়েছে , তাও পরশু রাতে । নইলে ওই টুকটাক হোয়াটসআপে চ্যাট । খুব দেখতে ইচ্ছে করছিল তিন্নিকে ।এসব ভাবতে ভাবতে সরোবর কখন পৌঁছে গেছে সুমন্তের খেয়াল নেই ।
-দাদা । সরোবর এয়েছে । নাব্বেন তো নাকি !
-ও হ্যাঁ ! এই নাও ।
প্যান্টের ছোট পকেট থেকে দশ টাকার একটা কয়েন বার করে দিলো অটোওয়ালাকে ।
( আবার ফোনে রিং )
ওপাশ থেকে – কোথায় ?
-এই তো নেমেছি । তুই কোথায় ? হ্যাঁ দেখতে পেয়েছি ।
রাস্তার ওপারে তিন্নি দাঁড়িয়ে । সে আজ সেজেছে । পরনে গোলাপি কুর্তি , আর সাদা লেগিন্স না কি বলে ..ওটাই ।
-আজ সেজেছিস হঠাৎ!
-হ্যাঁ । মাঝে মাঝে সাজতে ভালোই লাগে ।
-কই আমি এতবার বলি..তখন তো নাক সিটকোশ ।
-সেই কবে বলেছিলি! শেষ বার পুজোয় । সেজেছিলাম তো ।
-ঠিক আছে ঠিক আছে। চল ভেতরে যাই ।
-এই, আমি কিন্তু হাঁটবো না । এমনিতেই গরম এত ।
-সেই তো, লেজি মেয়ে একটা ।
-হ্যাঁ হ্যাঁ, তুমি তো কর্মবীর । সকাল দশটা অবধি ঘুমিয়ে আমায় জ্ঞান দিচ্ছিস।
-হ্যাঁ দিচ্ছি । জ্ঞান আছে তাই দিচ্ছি ।
-চলতো !
সুমন্তের হাত ধরে টেনে তিন্নি ভেতরে ঢুকালো । সুমন্ত ভালবাসে তিন্নিকে । আর ওর সাথে তিন্নির এই খুনসুটি গুলো তার একান্তই আপন । তিন্নি রাগ করে কি করে না তা না জানলেও কিন্তু সুমন্ত রাগ ভাঙাতে সবসময় প্রস্তুত আর কি ।
তিন্নি কে আজ বেশ সিরিয়াস মনে হচ্ছে । লেকের ধারে একটি বেঞ্চিতে বসলো দুজন ।
সুমন্ত বললো – কি হয়েছে ? মন খারাপ নাকি ?
-একটা সমস্যা হয়েছে রে ।
-আবার কি হলো ?
-বুঝতে পারছি না কি করবো ?
-কি হয়েছে বল ।
-বাবা আমার বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে । একটা ছেলেও ঠিক করে ফেলেছে ।
-কি বলিস! কই আগে জানাস নি তো!
-সামনে সামনি বলাটাই বেটার । তাই আগে বলিনি ।
সুমন্ত বুঝতে পারলো না , ও এর প্রত্যুত্তরে কি বলবে।
তিন্নি চোখ ফিরিয়ে নিলো ওর থেকে । নিস্তব্ধ । নিশ্চুপ ।
গোধূলির কমলা রং যেন ধূসর হতে শুরু করলো । সন্ধ্যে নামার অপেক্ষায় ।
সুমন্ত তিন্নির হাতে হাত রেখে বললো -“চিন্তা করিস না । আমি কাকুর সাথে কথা বলবো । তারপর দেখা যাবে ।”
তিন্নি তখনও চুপ । সুমন্তও ব্যাপারটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না ।
-কাকু কি বলেছে ?
-তুই বুঝতে পারছিস না । বাবা আমাদের ব্যাপার মেনে নেবে না ।
-কেন? চাকরি করি তো নাকি! সে একমাসই হয়েছে তাতে কি ।
-তুই সিরিয়াসলি কথা বলবি বাবার সাথে?
-হ্যাঁ, বলবো ।
ভয় করছিল সুমন্তের। খুব ভয় করছিল । ঠিক করছে না ভুল কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না সে। হঠাৎ তিন্নি দাঁড়িয়ে পড়ল।
-কি হলো?
তারপর তিন্নির কি হাসি !
-কি রে, হাসছিস কেন ? তার কাটলো নাকি !
তিন্নি চিৎকার করে বললো- এপ্রিল ফুল বানায়া! হা হা হা!
-তবে রে, দাঁড়া তোর হচ্ছে ।
বলেই তাড়া করলো তিন্নিকে । তিন্নিও ছুট দিলো । সুমন্তের মনে ছিল না আজ 1st এপ্রিল । দৌড়তে দৌড়তে ধরে ফেলল অবশেষে ।
-তোর মনে ছিল না তো ? জানি তো!
দুজনেই হাঁপাচ্ছে । একে অপরের দিকে তাকিয়ে হেসেই চলেছে । হঠাৎ সুমন্ত থেমে পড়লো। না সে আর হাসছে না। তিন্নি দেখে একটু শান্ত হলো । সেই মুহূর্তে তিন্নির ঠোঁটে ঠোঁট বসিয়ে দিলো সুমন্ত। তিন্নি নতুন করে স্বাদ পেলো সুমন্তর। লাজুক চোখে আবার তাকিয়ে দেখলো। তারপর সুমন্তের বুকে মাথা রেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো ।
নাহ, তিন্নি ভুল করে নি । তার মনের মানুষ চিনতে। হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে তিন্নি বললো- “আমি বাবাকে তোর সম্বন্ধে বলেছি । দেখা করতে চেয়েছে তোর সাথে ।”
-তাই!
সুমন্ত অন্য এক সুখের অনুভূতি পেলো।হ্যাঁ, বেশ অন্যরকম। লেকের ধারে এসে বসলো দুজনে । তাদের নীল প্রতিফলনের দিকে চেয়ে নিজের ভবিষ্যতের কথা ভেবে খুশি হলো সুমন্ত ।
তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেলো। সুমন্তর আশ্বাস পেয়ে তিন্নির মনে পড়ে যায় , তিন বছর আগের তাদের প্রথম আলাপের মুহুর্তটা। সুুমন্ত প্রপোজ করার সময় লিখেছিল –
“এক মুঠো বিকেল দেবো ,
আর খুচরো কিছু সন্ধ্যে , সরোবর ঘেঁষা ।
আমি ভালবেসে ফেলেছি তোকে ।”
The vibrant city of Kolkata is set to host an extraordinary musical event as renowned Indian music…
In a heartwarming ode to friendship and the unifying spirit of Pujo, SVF Brands has…
The year 2024 has not been what I had planned so far. Everything went downhill.…
Following the resounding success of the inaugural edition, SVF Musicproudly announces the arrival of the…
Amidst ongoing speculations regarding the leading lady opposite Shakib Khan in the upcoming film 'Toofan',…
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
This website uses cookies.