জানলা দিয়ে বাড়ির সামনের রাস্তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে আকাশের মা। আকাশের ফাইনাল সেমিস্টারের রেজাল্ট বেরনোর দিন আজ। আকাশ পড়াশোনা করতে খুব ভালোবাসত। আকাশের মাকে চিন্তিত থাকতে দেখে বাবা বলল
-“তুমি এত চিন্তা করছো কেন বলতো? জানো তো আকাশ পড়াশোনায় কত ভালো!”
-“সবই জানি আমি,কিন্তু তাও আকাশের জন্য চিন্তা হয়।”
-“বেশি চিন্তা করো না,আকাশ ঠিক সময় মতো চলে আসবে। সকাল থেকে না খেয়ে আছো তুমি,এরপর তো নিজের শরীর খারাপ করবে।”
-“না না শরীর খারাপ হবে না আমার। আকাশ আসুক, তারপর একসাথে খাবো।”
বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে আকাশকে আসতে দেখে মা বলল
-“তাড়াতাড়ি যাও আকাশ আসছে,দরজাটা খুলে দাও।”
ঘরে এসে বাবাকে মিষ্টির প্যাকেটটা হাতে দিয়ে আকাশ মাকে কোলে তুলে নিয়ে ঘোরাতে ঘোরাতে বলল
-” মা আমি পরীক্ষায় পাস করে গেছি, ফ্রাস্ট ক্লাস পেয়েছি আমি।”
-“আকাশ আমাকে নামা, পড়ে যাব আমি।”
-“তোমরা খুশি তো এবার?”
-“খুব খুশি হয়েছি আমি,সারাটা জীবন যেন তোর মুখে এই হাসিটা দেখতে পারি।”
-“আহা কী সুন্দর রসগোল্লা,মনটা মিষ্টিতে ভরে উঠেছে একেবারে। তোর মায়ের জন্য কিছু আনিসনি আকাশ।”(মিষ্টি খেতে আকাশের বাবা বলল)
-“কী বলো না তুমি,ও আবার কী নিয়ে আসবে আমার জন্য,ওর এত সুন্দর রেজাল্টের খুশিতে আমার মনটা আনন্দে ভরে গেছে।”(আকাশের মা বলল)
কিছুদিন পর বিদেশে পড়তে যাওয়ার সুযোগ এল আকাশের।বিদেশে যাওয়ার আগের দিন রাতে খুব কান্নাকাটি করেছিল আকাশের মা। বিদেশে গিয়ে, আকাশ কলেজে হোস্টেল থেকে পড়াশোনা করত। প্রত্যেকদিন আকাশ খাওয়ার সময় মায়ের ছবিটা সামনে রেখে খেত এবং রাতে বালিশের পাশে ছবিটা রেখে ঘুমাতো।কলেজের পড়াশোনা শেষ করার পর, বিদেশের কোম্পানিতে চাকরি সুযোগ পেল আকাশ, কিন্তু সে চাকরিটা করতে চাইল না।তার ইচ্ছে ছিল, কলকাতাতে চাকরি করার।কিছুদিন পর, কলকাতার একটা ভালো কোম্পানিতে চাকরি পেল আকাশ,খুব খুশি হয়ে মাকে ফোন করে বলল
-“মা, আমি কলকাতার একটা ভালো কোম্পানিতে চাকরি পেয়েছি।”
-“বাঃ খুব ভালো খবর, তাহলে তুই কবে আসছিস কলকাতায়।”
-“কিছুদিনের মধ্যে আমি আসছি, মা তুমি চিন্তা করো না।”
বিদেশ থেকে বাড়ি ফিরে বাবা ও মায়ের পছন্দ মতো একটা গাড়ি কিনেছিল আকাশ। দুর্গাপুজোর প্রত্যেকদিন বাবা ও মাকে গাড়ি করে ঠাকুর দেখালো সে।
বাবা ও মায়ের পছন্দমত, শ্রাবনী নামে এক সুশিক্ষিত ও সুন্দরী মেয়ের সাথে বিয়ে হয় আকাশের। বিয়ের দিন রাতে সে শ্রাবনীকে বলল
-“তুমি আমার একটা কথা রাখতে পারবে কি?”
-“হ্যাঁ বলো।”
-“আমি আমার বাবা মায়ের মতোই, তোমার বাবা মাকে সমানভাবে দায়িত্ব, কর্তব্যের সাথে ভালোবাসব আর আমিও চাই, তুমিও আমার বাবা ও মাকে সমানভাবে ভালোবাসো।”
-“আমিও তোমাকে কথা দিচ্ছি, সারাটা জীবন ধরে আমি ভালোবাসব তাদের।”
একদিন অফিস থেকে বাড়ি ফিরে আকাশ মাকে বলল
-“মা, কাল তোমাকে আর বাবাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাব।”
-“কোথায় নিয়ে যাবি আকাশ?”
-“এখন আমি কিছু বলবো না,কাল তুমি নিজের চোখে দেখতে পারবে।”
পরের দিন সকালে বাবা,মা ও শ্রাবনীকে সঙ্গে করে বেরিয়ে পড়ল আকাশ।কিছুক্ষণ পর গাড়ি এসে থামল একটা বাড়ির সামনে,আকাশ গাড়ি থেকে নেমে বলল
-“বাবা,মা নেমে এসো তোমরা।”
গাড়ি থেকে নেমে আকাশের মা অবাক চোখে বলল
-“এটা কাদের বাড়ি আকাশ!”
-“মা, এটা আমাদের নতুন বাড়ি,পছন্দ হয়েছে তোমার?”
-” কী দরকার ছিল এসবের!”
-“প্রতিমাসের মাইনার কিছু টাকা জমিয়ে এই বাড়িটা আমাদের জন্য কিনেছি।”
-“আচ্ছা বাবা, বাড়ির সামনের নেম পেল্টে তোর নাম না লিখে, স্বপ্নপূরণ লিখেছিস কেন?”
-“জীবন ও স্বপ্ন মানে আমার কাছে তুমি আর বাবা, প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে স্বপ্ন দেখার সাথে সাথে পূরণ করার জন্য চেষ্টা করতে হয়। তোমাদের দুজনের আর্শীবাদে আমি জীবনের স্বপ্নগুলো পূরণ করতে পেরেছি, তাই আমাদের বাড়ির নাম দিয়েছি স্বপ্ন পূরণ।”
সমাপ্ত
হলদিয়াতে পেট্রোকেমিক্যাল কারখানা শুরু হওয়া থেকে সিঙ্গুর থেকে টাটাদের চলে যাওয়া। বান্তলা থেকে ধান্তলা, ওদিকে…
A storm is brewing this Puja. The poster of Raghu Dakat has been revealed, and…
The vibrant city of Kolkata is set to host an extraordinary musical event as renowned Indian music…
In a heartwarming ode to friendship and the unifying spirit of Pujo, SVF Brands has…
The year 2024 has not been what I had planned so far. Everything went downhill.…
Following the resounding success of the inaugural edition, SVF Musicproudly announces the arrival of the…
This website uses cookies.