আমার নাম, আমার মা রেখেছিলেন ” পরিণতি “। কি যেন, কি ভেবে রেখেছিলেন। মা আর আমি একে অপরের সঙ্গী। সুখ দুঃখ এক সাথেই ভাগাভাগি করি। আজ আমার মায়ের মনটা ভীষণ খারাপ। নিজের ঘরের দরজা লাগিয়ে, আলো নিভিয়ে কাদঁছেন। আমি গিয়েছিলাম জিজ্ঞেস করতে, ” মা, ভাত খাবে না? ” তবে উত্তর পাই নি।
অনেক গুলো বছর পর মা কে এইভাবে ভেঙ্গে পরতে দেখে কষ্ট হচ্ছে অনেক। কি করবো, আসলে বুঝতে পারছি না।
আমার বয়স তখন সাত বছর, বাবা মায়ের সাথে রাগ করে ঘর থেকে বেরিয়ে যান। আর ফেরেন নি। পথে এক বাসের তলায় এসে, তাঁর মাথার হাড়গুলো চূর্ণ হয়ে যায়। খুলি থেকে মগজ বের হয়ে গেছিলো। আমি সেদিন প্রথমবারের মতো লাশ দেখেছিলাম। বাবার চোখ খোলা ছিল, যেন মায়ের প্রতি সব রাগ তাঁর চোখে ভেসে উঠেছিল। লাল টকটকে, যেন এখনই রক্তাক্ত অশ্রু বেরিয়ে আসবে। মাথার অর্ধেক অংশে কোন হাড়, চামড়া, চুল কিছুই ছিল না। লাল মগজ দেখা যাচ্ছিলো। কপাল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল গলিত মগজ। মর্গে এক ধরনের গন্ধ থাকে। সেই গন্ধ আমি সহ্য করতে পারি নি। বমি চলে এসেছিল। তাই বেরিয়ে যাবো এমন সময় ধোঁয়া ধোঁয়া হিমাগারে কেমন যেন লাগছিল, বাবা ডাকছে, “পরি, পরি মা, কাছে আয়।”
সেই দিন মা এইভাবেই কেঁদেছিল, আজকের মত। আমার মনে আছে, সে রাতেও মা খাবার খায় নি। বাবার সেই অবস্থা দেখার সাহস মায়ের ছিল না। তারপর থেকে মা আর আমি একই সাথে যেন বড় হতে থাকলাম। একে অপরের হাত ধরে।
গত বছরের কথা। বন্ধু যখন প্রেম প্রস্তাব দিল, আমি কোন উত্তর না দিয়েই ছুটে এসেছিলাম মায়ের কাছে। মা বলেছিল, ” বন্ধুর চেয়ে ভালো সঙ্গী আর কেউ হতে পারে না। ” তার কথা বিশ্বাস করেই মৃন্ময়ের সাথে আমার প্রেম। বেশ ফুটফুটে শিশুর মতো কোমল প্রেম ছিল। তারপর হঠাৎ করেই সে বদলে গেলো। সংযোগ ছিন্ন হলো। মা আমাকে আগলে রাখতে থাকলো। খুব একটা সময় হয় নি আমাদের বিচ্ছেদের। মাত্র কদিন আগের কথা। খুব কষ্ট হয়, ভালোবাসা না থাক, প্রিয় বন্ধুট যখন দূরে চলে যায়। মন চায় যেন সব শেষ করে দেই।
ভাবছিলাম তাকে আজ একটা ফোন দিয়ে দেখি, সে কেমন আছে। এই ভেবেই নিচে ড্রইং রুমের দিকে যাচ্ছিলাম তখন দেখি মৃন্ময় ও এসেছে আমাদের বাসায়। তার চোখ দুটো লাল হয়ে আছে। সাদা পাঞ্জাবি পড়েছে। ওকে সব সময় পাঞ্জাবিতে মানায়। আমি বললে, তো সে কখনোই পড়তো না। আজ কি মনে করে পাঞ্জাবি পড়ে এলো! আমি কাছে গেলাম, জিজ্ঞেস করলাম, ” তুমি এখানে? ”
সে কিছু বলছে না। কাঁদতে লাগলো। আমি তার হাত দুটোর উপর হাত রাখতে চেষ্টা করলাম। জিজ্ঞেস করতে চাইলাম, ” কি হয়েছে তোমার?”
কিন্তু কেন যেন রাখতে পারছিলাম না। যেন আমার হাত বাতাসের মত তাকে ছুঁয়েও, না ছোঁয়া হয়ে গেলো। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। আমি তাকে ছুঁতে পারলাম না কেন?
এ কথাটাই মাকে বলতে যাবো। হঠাৎ
দেখি বাবা দাঁড়িয়ে আছেন। ভয়াবহ সেই দৃশ্য। মাথার অর্ধেকাংশ খুলি নেই। মগজ যেন গোলে পড়ছে কপালে। মাথা ভর্তি রক্ত। আমি অবাক হয়ে গেলাম। বাবা মারা যাওয়ার অনেক গুলো বছর কেঁটে গেছে। এখন তিনি ? কিভাবে? বাবা আমাকে ডাকলেন, ” আয় বাবা, আমার কাছে আয়। আমাদের যাবার পালা চলে এসেছে।”
আমি ভয়ে দৌড়ে মায়ের ঘরে গেলাম। মা তাঁর বিশাল আয়নার সামনে বসে কাঁদছেন। আমি তাঁর পাশে দাড়ালাম। “মা, মা” বলে ডাকলাম। তিনি শুনলেন না। মা, মৃন্ময় আমাকে শুনছে না কেন! আমি তাদের স্পর্শ করতে পারছি না কেন! বাবা! বাবা এলো কিভাবে! বিভীষিকায় যেন আমি হিম হয়ে আসছি। আমি কি করবো, বুঝতে পারছি না।
পরক্ষণে, আয়নায় চোখ পড়তেই মা কে দেখলাম। কিন্তু নিজেকে…! নিজেকে দেখতে পারছি না!
কেন!
আমি নিজেকে আয়নায় কেন দেখতে পারছি না। আমার অস্থির লাগছে। কেন এমন হচ্ছে! আমি কি স্বপ্ন দেখছি!
আমি ভয়ে নিজের ঘরে গেলাম। ঘরের দরজা দিয়ে ঢুকতেই আমার দম বন্ধ হতে শুরু করলো। হাত পা যেন ঠান্ডা হয়ে গেলো। আমার চোখের সামনে আমার বিছানা থেকে টপ টপ করে রক্ত পড়ছে , আমারই…..
আমি সামনে গেলাম। মনে পরলো, মৃত্যুর পর মৃত মানুষের আত্মা কিছু সময়ের জন্য আশেপাশেই থাকে।
The vibrant city of Kolkata is set to host an extraordinary musical event as renowned Indian music…
In a heartwarming ode to friendship and the unifying spirit of Pujo, SVF Brands has…
The year 2024 has not been what I had planned so far. Everything went downhill.…
Following the resounding success of the inaugural edition, SVF Musicproudly announces the arrival of the…
Amidst ongoing speculations regarding the leading lady opposite Shakib Khan in the upcoming film 'Toofan',…
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
This website uses cookies.