ঠিক কেমন হতো,
যদি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ময়দানে সহস্র লাশের ওপর দিয়ে ঘোড়া ছুটিয়ে,তুমি ধেয়ে আসতে হিটলারের গোলা বারুদের সম্মুখে?
কেমন লাগত ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে একটুকরো রুটির জন্য কুকুর মানুষের লড়াই দেখতে?
কেমন হত যখন তরুণ যুবকদের ঘরের মা বোনদের স্বদেশী করার অপরাধে টেনে নিয়ে গিয়ে ফেলা হত সাহেবদের কোঠাবাড়িতে?
ইতিহাসের পাতায় চাপা পড়ে থাকা এসব কাহিনী পড়তে পড়তে গল্প কথায় রোমাঞ্চ জেগেছে ভুরি ভুরি,
ভাবিনি এসবই কখনও সত্যি করে তুলে ধরবে ২০২০।
২০২০ এক অভিশপ্ত সাল।
একদিকে ভয়ংকর ভাইরাস দানব রূপে গ্রাস করেছে সমগ্র পৃথিবী।
অন্যদিকে ক্ষুধার জ্বালা ধীরে ধীরে বিকল করে দিচ্ছে মনুষ্যত্বের বেড়াজাল।
তার উপরে আমফান-ভূমিকম্প- দাবানল- রাষ্ট্রযুদ্ধ-বন্যার মত প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট বিপর্যয়েও বারবার আহত হয়েছে এই মহাবিশ্বের বক্ষস্থল।
শুনেছিলাম, প্রকৃতিই সমগ্র জগৎ সংসারের একমাত্র আশ্রয় তার প্রেমেই সমস্ত জীবকুলের সৃষ্টি আর তার ক্ষোভেই হবে জগতের বিনাশ। মানুষ ভুলতে বসেছিল সেই নিগূঢ় সত্য। ২০২০ যেন সেই সত্যিই আবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
কখনো আগুনের লেলিহান শিখার দিকে পিপিলিকার পালকে সারে সারে ধেয়ে আসছে দেখেছো কি?
আমি দেখেছি,
দেখেছি সুনিশ্চিত মৃত্যুর দিকে অভুক্ত মানুষকে ছুটে যেতে।
মহামারীর তপ্ত গ্রাসে দগ্ধ মানুষের জীবন সংগ্রাম।
একমুঠো চাল, এক টুকরো রুটি হয়তো সরকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
কিন্তু টাইফয়েডের চিকিৎসায় গ্রাম থেকে উঠে আসা একটি বছর ছাব্বিশের তরুণের জীবন কি ফিরিয়ে দিতে পেরেছে আজকের মহানগর?
চার চারটি বড় বড় হসপিটালের গেট থেকে ফিরে আসা অসহায় বাবা-মার চোখের সামনে ছটফট করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া ছেলেটিকে আজ কি জবাব দেবে ২০২০?
রক্তাভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরা থ্যালাসেমিয়া শিশু, বা ক্যান্সারে আক্রান্ত কেমো বিহীন হাজার হাজার রোগী, কিম্বা ডায়ালিসিস চলাকালীন অকালে মৃত্যু বরণ করা যুবক হতে প্রৌঢ় তাদের জন্য কি সত্যিই কিচ্ছু করার ছিল না ভাইরাসে আক্রান্ত ২০২০-র?
মারন ভাইরাসের মৃত্যু ছোবল কি রাজনীতিবিদদের রঙবদলের চেয়েও বেশি ভয়ংকর?
মনে হয় না…..
তাই যদি হত তাহলে গণমাধ্যমের পাতায় পাতায় জনগনের দুর্দশার কাহিনি না লিখে তারকাদের অন্দরমহলের সাতকাহন খোদাই করা থাকত না।
হসপিটাল গুলোতে শয্যা খালি থাকার সত্বেও রোগীর পরিষেবা না করে, রাতারাতি শুধুমাত্র খাতায় কলমে হাজার হাজার বেড বেড়ে যাওয়ার খবর নিয়ে মাতামাতিও করত না।
মানুষ আজ করোনাকে নয় বরং করোনা হলে বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুকে বেশি ভয় করে।
এই সস্তার রাজনীতি আর বিনিপয়সার স্যানাটাইজারের মধ্যে কোনটিতে যে বেশি ভেজাল তার হিসেব গুলিয়ে যায় ক্ষুধার জ্বালায়।
যে কঠিন সময়টায় সকলে মিলে এক হয়ে মানুষের পাশে থেকে লড়াই করার সময়,সেই সময়টাতেও কিছুজন গদির তলায় লাশ চাপা দিয়ে রাজা-রানি-বাদশা-সেপাই-মন্ত্রী হবার খেলায় মেতে উঠেছে ।
আমি দেখেছি,অভাবের তাড়নায় ভালো ঘরের বউকেও দু টাকার চাল হাত পেতে নিতে।
আবার কোথাও সেই চাল বেশি দামে বেচে মুনাফা লুটতে।
মধ্যবিত্ত -শিক্ষিত- বেকার সম্প্রদায়ের হয়েছে আবার অন্য মরণ।
তারা না পারে রেশনের দুই টাকার চালে নিজেদের জঠর পরিতৃপ্ত করতে আবার না পারে পেটে কিল মেরে বেকারত্বের জ্বালা নিবৃত্তি করতে।
মধ্যবিত্ত হওয়াটাই তাদের অভিশাপ।শিক্ষিত হওয়াটা তাদের পাপ। বিবেকবান হওয়াটা তাদের কাছে বিলাসিতা।
তাদের ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা দিয়ে এই দুর্দিনে মাসের পর মাস বসে বসে খাবার মতও সামর্থ্য নেই, আবার অসহায় দরিদ্রের খাতায় নাম লিখিয়ে কারোর করুণা ভিক্ষা করারও সুযোগ নেই।
মৃত্যুভয় উপেক্ষা করেও তাদের কমতি নেই স্লোগান -মিছিল -ধর্না -ছুটোছুটি,
পেটের জ্বালায় ২০২০ আবারো দেখালো বিগলিত পৃথিবীতে ‘পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’।
মহামারীর দিনে যখন বিনিপয়সায় একচামচ বিষ ও পাওয়া দায় তখন সস্তায় যেটা লভ্য,তা ভালো হোক বা খারাপ লুটে নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
সবচেয়ে অবাক লাগে মাস্কের নামে ব্যবহৃত একখন্ড কাপড়ের আচ্ছাদন মানুষের মুখে যেভাবে লাগাম লাগিয়ে দিয়েছে তার প্রকারভেদ দেখে।
তারা নিজেরাও জানে এই কাপড় কোনদিনই মারণ ভাইরাসকে রুখতে পারবে না তবুও অশিক্ষিত সাধারন মানুষদের মাথায় টুপি পরিয়ে দুপয়সা কামানোর আশা কেই বা ছাড়তে পারে?
মানুষের বিশ্বাস আর অজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মাস্কের ভুল পরিধান পদ্ধতি, ভুল কাপড়, ভুল গঠনে রোজ হাজার হাজার মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে এই মাস্ক কোম্পানির মালিকরা।
অবশ্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ চিত্র কিছুটা আলাদাও বটে, তখন সাধারন মানুষের প্রতিবাদ বর্বরতার রূপ নেয়।
ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিনিয়ত নিরলস পরিশ্রমকে উপেক্ষা করে রোগ সংক্রমণের অজুহাতে তাদের উপরে শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার, কৃতজ্ঞতার পরিবর্তে তাদের পাড়া চ্যুত করা, তাদের স্বামী সন্তান পরিবারের লোকেদের সামজে বের হতে না দেওয়া এবং সর্বোপরি সামান্য ভুল ত্রুটিতে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা দেখে হয়তো আজ হিটলারের মতো স্বৈরাচারী অত্যাচারী শাসকেরও হৃদয় টলে যেত।
গোলাবারুদ কামান অস্ত্র ছাড়াও ২০২০-র এই জীবন মরণ লড়াই আজ হয়তো ইতিহাসের তাবড়তাবড় যুদ্ধবিদদের পায়ের তলার মাটি সরে যেত।
তাই কখনো আফসোস করো না যে-তুমি ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ,পঞ্চাশের দুর্ভিক্ষ,স্বদেশী আন্দোলন বা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শামিল হতে পারোনি বলে, তখন প্রযুক্তিবিদ্যা এবং যন্ত্রশক্তিতে পৃথিবী অনেক পিছিয়ে ছিল বরং আফসোস করো এই ভেবে যে, একবিংশ শতাব্দীর উন্নত প্রযুক্তিতে ভর করে রকেটের বেগে ধাবিত পৃথিবীকেও আজ ২০২০-র মহামারী দেখতে হল।।
The year 2024 has not been what I had planned so far. Everything went downhill.…
Following the resounding success of the inaugural edition, SVF Musicproudly announces the arrival of the…
Amidst ongoing speculations regarding the leading lady opposite Shakib Khan in the upcoming film 'Toofan',…
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
In a spectacular celebration coinciding with the birthday of the iconic actor Prosenjit Chatterjee, the…
হিমেশ রেশামিয়ার পর সুরাশা মেলোডিজ থেকে অনুষ্কা পাত্রর নতুন গান পুজো আসছে মানেই বাঙালির নতুন…
This website uses cookies.