LaughaLaughi

You Create, We Nurture

I got a story to tell

জয়িতা- প্রথম পর্ব- প্রথম দেখা

“বাবু পারবি?”- মা আমাকে প্রশ্ন করল…।
” হ্যাঁ আর কি, কিছু করার তো নেই এখন …” আমি একটু বিরক্তির সাথেই উত্তর তা দিলাম।

মা গালে হাত বুলিয়ে আর হালকা একটা হাসি দিয়ে চলে গেল।প্রায় দেড় বছর পর এসেছি ঘর। শুধু একটু শান্তি র জন্য। যাতে কোন কাজে না জড়িয়ে পড়তে হয়।। কিন্তু যতই কাজ থেকে দূরে যাওয়ার চেস্টা করি ততই পেছনে ধাওয়া করতে থাকে জিনিসটা।
পাড়ার প্রকাশ কাকুর মেয়ের বিয়ে… ভদ্রলোক প্রায় ৩৫ বছর কেন্দ্রিয় সরকার এর অধিনে কাজ করেছেন। তাই রিতিমত খুব ভালো ভাবেই টাকা জমিয়েছেন মেয়ের বিয়ের জন্য। মেয়েটা যথেষ্ট সৌভাগ্য নিয়ে এই ঘরে জন্মেছে।। কিন্তু আমি দুর্ভাগ্য নিয়ে উনার পাড়ায় জন্মেছি, তাই আজ এই দিন দেখতে হচ্ছে। কারন, প্রকাশবাবু কারোর সাথে তেমন কথা বলেন না।। কিন্তু আমার বাবার খুব ভালো বন্ধু ছিলেন। বাবা মারা যাওয়ার পরও তিনি আমাদের সাথে সেই সম্পর্কটা বজায় রেখেছেন। তাই ওনার এত বড় কাজে আমরা ছাড়া র কেই বা আছে??
আমি বিয়ের ঠিক দুই দিন আগেই এসেছি।। তাই কোনোভাবেই কোন কাজে জড়াতে চাইছিলাম না। কিন্তু এতেও রেহায় পেলাম না। মা ঠিক কাজে লাগিয়েই দিল।
তাও যদি বিয়েবাড়ির কোন কাজ হত মানতাম, মা এর হুকুম যে কাকু দের ঘরে একজন গেস্ট এসেছেন…… ওনাকে নিয়ে একটু বাইরে যেতে হবে। কিছু জিনিস কেনার আছে।
মা এর কথা। না কোনোভাবেই করতে পারলাম না।
এইজন্য আমার সম্মতি পাওয়ার সাথে সাথেই মা চলেগেল অতিথি কে ডাকতে। আমি তখন পাশে রাখা চেয়ারটাতে গিয়ে বসলাম। কিছু করার ছিলনা তাই পকেট থেকে মোবাইল টা বের করে ঘাটতে থাকলাম। কিছুক্ষন পরে মা এর গলার আওয়াজ-
“বাবু… জয়িতা এসে গেছে।“
আমি তখন মুখ তুলে একবার তাকালাম। আমি সেই দৃশ্যের বর্ণনা দেওয়ার মতন অবস্থায় ছিলাম না। কারন আমার সামনে যিনি দাড়িয়েছিলেন তার বর্ণনা খুজতে গেলে ওই মুহুর্তের মাহাত্যটাই আমি হারিয়ে ফেলতাম। পরনে হলুদ রঙের সালোয়ার, গায়ের রঙ দুধের মতন ফরসা, তার ঠোঁট এর গোলাপি রঙের মধ্যে দিয়েই যেন সে সব আকর্ষণ নিজের দিকে টেনে নেয়…ডান দিকের নাকে একটা ছোট্ট নাকচাবি এক আলাদাই মাধুর্য তৈরি করেছিল…শরিরের ত্বক যেন প্রত্যেকটা সুন্দরতার বর্ণনা দিচ্ছিল। আমার দিকে তাকান চোখ দুটির মধ্যে দিয়েই আমি যখন নিজেকে দেখতে পাচ্ছিলাম তখন আমার মুখেও হালকা মাধুর্যপূর্ণ হাসি ফুটে উঠলো… আমি নিজের থেকেই হাত বাড়িয়ে ফেললাম অনুনয় আবেদন এর উদ্দেশ্যে…

“হ্যালো……আমি জয়িতা” মেয়েটি বলল একটা হালকা হাসি দিয়ে।

Facebook Comments Box
Editorial Team of LaughaLaughi